শিবলিঙ্গ উচ্ছেদের রায় লেখার সময় জ্ঞান হারালেন সহকারী রেজিস্ট্রার। পরিস্থিতি দেখে রায়ই বদলে ফেললেন বিচারপতি। চমকে ওঠা ঘটনাটি শুক্রবার ঘটেছে কলকাতা হাইকোর্টে। গোটা ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে হাইকোর্টে। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এক খণ্ড জমি নিয়ে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার খিদিরপুরের বাসিন্দা সুদীপ পাল ও গোবিন্দ মণ্ডলের মধ্যে বিবাদ চলছিল। চলতি বছরের মে মাসে হাতাহাতির পর্যায়ে পৌঁছয় বিবাদ। একে অপরের বিরুদ্ধে বেলডাঙা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন সুদীপ ও গোবিন্দ। নিম্ন আদালত থেকে উভয়েই জামিন পান।
অভিযোগ, এরপরই বিতর্কিত জমিতে রাতারাতি শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেন গোবিন্দ। এ নিয়ে থানায় অভিযোগ করেন সুদীপ। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেয়। কিন্তু, পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন সুদীপ। বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর এজলাসে মামলার শুনানিতে পিটিশনকারী সুদীপ পালের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি আদালতকে বলেন, 'বিতর্কিত জমিতে গোবিন্দ ইচ্ছাকৃতভাবে শিবলিঙ্গ স্থাপন করেছিলেন। পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই এ বিষয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করুক।'
গোবিন্দের আইনজীবী মৃত্যুঞ্জয় চট্টোপাধ্যায় বিচারককে বলেন, 'আমার মক্কেল শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেননি। শিবলিঙ্গ নিজেই মাটি থেকে উঠেছে।' বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত এবার গোবিন্দ মণ্ডলের আইনজীবিকে প্রশ্ন করেন, কেন আপনি বিতর্কিত জমিতে শিবলিঙ্গ স্থাপন করেছেন? বিচারাধীন সম্পত্তিতে শিবলিঙ্গ স্থাপন করা কি যায়?' জবাবে গোবিন্দর আইনজীবী বলেন, আমার মক্কেল শিবলিঙ্গ প্রতিস্থাপন করেননি। শিবলিঙ্গ নিজেই মাটি ফুঁড়ে উঠেছে।'
ওই কথা শুনেF বিচারপতি সেনগুপ্ত বলেন, 'বিচারাধীন জমিতে হঠাৎ শিবলিঙ্গ এইভাবে স্থাপন করা যায় না। আমি এটা সরানোর নির্দেশ জারি করছি।' বিচারপতিj নির্দেশের পর সহকারী কোর্ট রেজিস্ট্রার বিশ্বনাথ রায় বিচারপতির রায় নথিভুক্ত করতে শুরু করেন। সেই রায় কিছুটা নথিভুক্ত করার পরই হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যান। তাঁকে ধরাধরি করে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা হাইকোর্টের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। সেই সময় কয়েক মিনিটের জন্য এজলাস ছেড়ে বেরিয়ে যান বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত। মিনিট দশেক পর এজলাসে ফিরে তিনি বলেন, 'আদালত এই বিষয় কোনও হস্তক্ষেপ করবে না। শিবলিঙ্গ স্থাপনের বিষয়টি নিম্ন আদালতের দেওয়ানি মামলার মাধ্যমে বিচার হবে। আমি এই মামলার নিষ্পত্তি ঘোষণা করলাম।'