বৈশাখের প্রথমদিন। ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কলকাতায়। তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় ৫ ডিগ্রি বেশি। রীতিমতো আগুনের হলকা বইছে বাইরে। তারইমধ্যে বসে রয়েছেন ওঁরা। অন্যদিনের মতোই। আজ, শনিবার আন্দোলনের ৭৬০ দিন। অনেকেই দুঃসহ গরমে বসে থেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সবথেকে বেশি কষ্ট হচ্ছে রোজাদারদের। তবু সব কষ্ট উপেক্ষা করে লড়াইয়ের ময়দানে একজোট তাঁরা। পয়লা বৈশাখের দিনেও সকাল ১০টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চাকরিপ্রার্থীরা ধর্না চালিয়ে যাবেন।
গান্ধী মূর্তির নীচে বসে থাকা নবম থেকে দ্বাদশের চাকরিপ্রার্থীরাই শুধু নন, তাঁদের সঙ্গে মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে ধর্না চালাচ্ছেন উচ্চ প্রাথমিক, প্রাথমিক, রাজ্য সরকারের ‘গ্রুপ ডি’, স্কুলের ‘গ্রুপ সি’ এবং ‘গ্রুপ ডি’, নতুন করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার দাবি জানানো চাকরিপ্রার্থীরা। চাকরিপ্রার্থীদের একজন শহিদুল্লাহ বলেলন, ‘‘রোজা রেখেছি বলে জলও খাচ্ছি না সারা দিন। অনেকেই রোদে বসে রয়েছে। যতই কষ্ট হোক ধর্না তুলে নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।’’
দেখা যাচ্ছে অনেকে ক্লান্তিতে রোদের মধ্যেই শুয়ে পড়ছেন। পানীয় জলও পর্যাপ্ত নেই। চাকরিপ্রার্থীরা নিজেরাই ওআরএস এবং প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম রেখেছেন। দুপুরের খাবার শুধুই মারি বিস্কুট। ভাগাভাগি করে খাচ্ছেন বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীরা। বীরভূমের চাকরিপ্রার্থী জয়ন্ত হাজরা বললেন, ‘‘ফুটপাতের ধারে বসে থাকতে খুবই কষ্ট হচ্ছে। একটু পরপরই আগুনের হলকার মতো হাওয়া আসছে। তবুই এ লড়াই চলবেই।’
ধর্মতলার আশেপাশে এবং ময়দানে গান্ধী মূর্তি ও মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে অবস্থান চলছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) মেধা-তালিকায় থেকেও নিয়োগ না পাওয়া প্রার্থী থেকে শুরু করে সরকারের চতুর্থ শ্রেণির চাকরি-প্রার্থীদের। শহরে যখন পয়লা বৈশাখের উদযাপন চলছে, তখন রাজ্যেই এই উচ্চশিক্ষিত যুবক-যুবতীরা চাকরির দাবিতে পথে বসে অপেক্ষায় রয়েছেন।
আরও পড়ুন-ঢুকতে পারবেন আপনিও, পয়লা বৈশাখে সবার জন্য খুলে দেওয়া হল রাজভবনের গেট