baisakhi banerjeeজেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরেই বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার দিচ্ছেন বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অর্পিতা তাঁর বান্ধবী, এই প্রথমবার প্রকাশ্য়ে স্বীকারও করে নেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী। নিজের বান্ধবীর কথা বলতে গিয়ে তৃণমূল নেতা শোভন চট্টোপাধ্য়ায় ও তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কের উদাহরণ দেন তিনি। বলেন, 'অর্পিতা আমার বান্ধবী। তাতে অসুবিধার কী আছে? আপনারা যদি শোভন-বৈশাখীকে দেখাতে পারেন, তা দেখাবেন। আর এখানে, দলে অনেককে খুঁজে পাবেন, সৌগতদাকে খুঁজে পাবেন।' তবে তাঁদের উদাহরণ টানায় ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেত্রী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যয়। তাঁর দাবি, 'অর্পিতার মতো বান্ধবী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের সব এলাকায় আছে। কার জন্য কী লিপস্টিক বা উপহার কিনেছেন, সেই সব তথ্য জানি। উনি এগুলি যত কম বলবেন ততই ভালো।'
বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী যখন বেঁচে ছিলেন তখনই তো 'ইচ্ছেডানা', 'অপা' তৈরি করেছিলেন। তখন তো অর্পিতাকে ভাগ্নি বলে পরিচয় দিতেন। কিন্তু স্ত্রীর মৃত্যুর পরে যখন লোকজন খেলনা ইত্য়াদি বাড়ি থেকে পেল তখনন দেখলেন, মামা-ভাগ্নির সম্পর্ক কলঙ্কিত হচ্ছে, তখন উনি বান্ধবী বলছেন। সেজন্য আমার তরফ থেকে ওঁকে সংগ্রামী অভিনন্দন জানাচ্ছি।'
বৈশাখী আরও বলেন, এখন নিজেকে পার্থবাবু অর্পিতার বন্ধু বলছেন। সেটা আগে বললে ভালো হত। উনি দুর্নীতি না করলে এই দিন দেখতে হত না। তাঁর কথায়, 'উনি আগে মামা ছিলেন। তখনই বান্ধবী বলতে পারতেন। তবে পুরুষ হয়ে এখন বান্ধবী বলে স্বীকার করে নিচ্ছেন, সেটা ভালো লাগছে। আমার মনে হয় জেল খেটে এসে পুরুষ হয়ে উঠেছেন। সেজন্য গর্বিতভাবে বলছেন অর্পিতাকে ছাড়ব না।'
শোভন চট্টোপাধ্য়ায় ও তাঁর নাম করায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন বৈশাখী। বলেন, 'শোভন বান্ধবীর জন্য পদ ছেড়েছিলেন। দুর্নীতি করেননি। মানুষের চাকরি খেয়ে বান্ধবীর গলায় হার পরাননি। আমার ও শোভনের সম্পর্ক খুব স্বচ্ছ। আমরা কখনও তো ভাইফোঁটা জাতীয় অনুষ্ঠান করিনি। সব সময় প্রকাশ্য়ে বলে এসেছি, আমরা একসঙ্গে থাকি। শোভনের ধক আছে তাই তাঁর স্ত্রী যখন ডিভোর্স ফাইল করেন, তখন বান্ধবীকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন। সেজন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। শোভনের পার্থর মতো মানসিকতা হলে তো আমাকে একটা কোঠি বাড়িতে রাখতে পারতেন। সেটা তো করেননি। সম্মান দিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে পার্থ-অর্পিতার কোনও তুলনা হয় না। উনি প্রতিহিংসাবশত আমাদের নাম নিচ্ছেন। তাতে আমরা বিচলিত নই।'
পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের আরও কুকীর্তী আছে বলেও দাবি করেন বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্যায়। তাঁর হুঁশিয়ারি, জেল থেকে ছাড়া পেয়ে পার্থবাবু অনেকের সম্পর্ক নিয়ে টানাটানি করছেন, কিন্তু স্ত্রী বেঁচে থাকাকালীন উনি কী করতেন, সেগুলো প্রকাশ করে দিলে বিপদে পড়বেন। তাঁর কথায়, 'উনি যেমন অনেকের বান্ধবীর নাম জানেন তেমনই আমিও এমন অনেক বান্ধবীর নাম প্রকাশ করলে বিপদে পড়বেন। ওঁর স্ত্রী বেঁচে থাকাকালীন কোন বান্ধবীর জন্য কাজল-লিপস্টিক কিনেছিলেন, সেই সব জানি। এমন অনেক কথোপকথনও আমার কাছে এসেছে। কাচের ঘরে বসে ঢিল না ছোড়া ভালো। পার্থর কি শুধু অপা, তার বাইরে অনেক মোনালিসা, অনেক এদিক ওদিক ছিল। উনি কথা না বাড়ালেই ভালো।'
পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে মিথ্য়াবাদী বলেও আক্রমণ করেন বৈশাখী বন্দ্য়োপাধ্যায়। বলেন, 'উনি মিথ্যের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছেন। যা বলেছেন, যা করেছেন সবই মিথ্যের উপর দাঁড়িয়েই। তবে আমার মনে হয়, উনি পরের নির্বাচনে 'অপাকে আমি ছা়ড়ব না' স্লোগান দেবেন বলে মনে হচ্ছে।'