India Bangladesh Relation: গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সকে দেওয়া অর্ডার বাতিল করল বাংলাদেশ, হাসিনা আমলের বরাত

কলকাতার গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স সংস্থাকে বিশেষ এক জাহাজ তৈরির বরাত দিয়েছিল বাংলাদেশ। সে সময়ে পড়শি দেশের ক্ষমতায় শেখ হাসিনা। অর্ডার দেওয়ার পর বছর না ঘুরতেই সেটি বাতিল করে দেওয়া হল।

Advertisement
গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সকে দেওয়া অর্ডার বাতিল করল বাংলাদেশ, হাসিনা আমলের বরাতGarden Reach Ship Builders
হাইলাইটস
  • গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স সংস্থাকে বিশেষ এক জাহাজ তৈরির বরাত দিয়েছিল বাংলাদেশ
  • রাতারাতি বাতিল করে দেওয়া হল সেই অর্ডার
  • শেখ হাসিনার আমলে নেওয়া সিদ্ধান্ত বলেই কি বাতিল অর্ডার?

তখনও দেশত্যাগ করেননি শেখ হাসিনা। তারও বেশ কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সকে বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি অত্যাধুনিক 'ওশাল-গোয়িং টাগ' বা বিশেষ ধরনের জাহাজ নির্মাণের অর্ডার দিয়েছিল। অর্ডারটি ছিল প্রায় ২১ মিলিয়ন ডলারের। যা ভারতীয় মুদ্রায় ১৮০ কোটি টাকা। বর্তমানে সেই অর্ডার বাতিল করা হয়েছে বলে খবর।

 শেখ হাসিনা সরকারের আমলে নেওয়া বহু সিদ্ধান্ত আগেও রদ করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। মনে করা হচ্ছে, বর্তমানে দুই প্রতিবেশির মধ্যে সম্পর্কের অবনতির কারনেই গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সের এই অর্ডারও বাতিল করা হয়েছে। যদিও বাংলাদেশ কেন এই জাহাজ তৈরির অর্ডার বাতিল করেছে, সে বিষয়ে কোনও অফিসিয়াল বার্তা মেলেনি। 

বাংলাদেশের সঙ্গে গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সের কী চুক্তি হয়?
বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, দৈর্ঘ্যে ৬১ মিটার এবং প্রস্থে ১৫.৮ মিটার আকৃতির একটি 'ওশান-গোয়িং টাগ' নির্মাণের বরাত পেয়েছিল গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স। এর গভীরতা হওয়ার কথা ছিল প্রায় ৭ মিটার। প্রতিরক্ষা কাঠামো শক্তি বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই এই জাহাজ নির্মাণের বরাত দিয়েছিল বাংলাদেশ। এই জাহাজটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৩ নটিক্যাল মাইল গতিবেগে যেতে পারবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা ছিল। বাংলাদেশ সরকারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ডিফেন্স পারচেজ এবং গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স সংস্থার মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২০২৪ সালের ১ জুলাই। ঠিক তার আগের মাসেই শেখ হাসিনা ভারত সফরে এসেছিলেন। উপস্থিত ছিলেন তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। সেই সময়েই দুই দেশের মধ্যে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। 

চুক্তি অনুয়ায়ী জাহাজটি তৈরি করে সর্বোচ্চ ২৪ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ডেলিভারি দেওয়া হবে বলেও একটি শর্ত ছিল। ফলে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ এটি বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার কথা ছিল গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সের। কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর বছর না ঘুরতেই অর্ডারটি এখন বাতিল করে দেওয়া হল। 

Advertisement

কী এই 'ওশান-গোয়িং টাগ' জাহাজ? 
উল্লেখ্য, ওশান-গোয়িং টাগ হল অত্যন্ত শক্তিশালী ক্ষমতাসম্পন্ন বিশেষ এক ধরনের জাহাজ, যা মাঝসমুদ্রে বা উন্মুক্ত সাগরেও বিপন্ন জাহাজকে 'টোও' করে টেনে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসতে পারে। এই ধরনের জাহাজকে 'টাগবোট'ও বলা হয়। এর একটি বিশেষত্ব হল, জাহাজটি নিজের থেকে বড় আকার জাহাজকে সামনে পা পিছনে ধাক্কা দিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা রাখে। পৃথিবীর সব বড় বড় বন্দর ও হারবারে টাগবোট একটি অপরিহার্য অংশ। বড় বড় জাহাজের ডকিং ও বার্থিং-এর সময় এই ধরনের ছোট ও শক্তিশালী জাহাজের প্রয়োজন পড়ে। 
 

এক শীর্ষস্থানীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ বিবিসি বাংলাকে বলেন, 'ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রায় ১০ বছর আগে থেকেই একটি সর্বাত্মক প্রতিরক্ষা চুক্তি রয়েছে। যদিও তার ধারাগুলি কখনওই প্রকাশ করা হয়নি বা পাবলিক ডোমেইনে নেই। তবে চুক্তিতে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহের আশ্বাস অবশ্যই আছে। আমার ধারণা গার্ডেনরিচকে ওই প্রতিরক্ষা জাহাজ বানানোর বরাত দেওয়া হয়েছিল এই চুক্তির অধীনেই।'

 

POST A COMMENT
Advertisement