বাংলার রাজ্যপাল লা গণেশনের আমন্ত্রণে বুধবার চেন্নাইয়ে গিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার মাঝেই তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিনের সঙ্গে বৈঠক করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা-স্ট্যালিন এই বৈঠক নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ইতিমধ্যে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। আর চেন্নাইতে স্ট্যালিন-মমতা এই সাক্ষাৎ নিয়েই তীব্র কটাক্ষ করেছে কংগ্রেস ও বিজেপি। এই নিয়ে তৃণমূলনেত্রীকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও।
স্ট্যালিন-মমতা সাক্ষাৎ নিয়ে দিলীপ ঘোষ
বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা সংসদ দিলীপ ঘোষ নিউটাউন ইকো পার্কে বৃহস্পতিবার সকালে প্রাতঃভ্রমণআসেন। সেখানেই সাংবাদিকদের সামনে স্ট্যালিন-মমতা বৈঠক নিয়ে মন্তব্য করেন। দিলীপ ঘোষ বলেন, "উনি ২০১৯ সালে সেই ডায়লগ গুলো মনে করুন। কি বলেছিল, বিজেপি একটাও সিট পাবে না মোদী হটাও দেশ বাঁচাও, তারপরে মোদী ৩০৩ টা সিট পেয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ১৮ টা সিট পেয়েছিলাম, তখন লালু- মূলায়ম-শিবসেনা অনেকের সঙ্গে ছিলেন, তারা এখন অনেকেই শহিদ হয়ে গেছে, এখন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। " প্রসঙ্গত বুধবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেন্নাই সফর নিয়ে মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপি নেতা বলেন, "উনি প্রতি ভোটের আগে পলিটিক্যাল ট্যুরিস্ট হয়ে রাজ্যে রাজ্যে ঘোরেন। দুর্ভাগ্য ওনার, যাদের সঙ্গে উনি বৈঠক করেছেন, তারা প্রায় কেউই ক্ষমতায় নেই। স্ট্যালিন আছেন একমাত্র টিমটিম করে। মুলায়ম ডুবেছে, লালু ডুবেছে, শিবসেনাকে আশীর্বাদ করেছিলেন,ওরাও ডুবেছে। উনি এবার স্ট্যালিনকে ডুবিয়ে আসবেন।"
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্ন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই প্রধান মুখ হিসাবে দেখতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই মাঝেই তিনি মমতা-স্ট্যালিন সাক্ষাৎ রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বুধবার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীকে নারকেল নাড়ু, শাড়ি, ধুতি উপহার দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান স্ট্যালিন ও তাঁর পরিবারও। ডিএমকে সূত্রের খবর, বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, সাংসদ কানিমোজি (স্ট্যালিনের বোন), ছেলে উদয় এবং ডিএমকে নেতা টিআর বালু। সূত্রের খবর, জাতীয় রাজনীতির বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়।
বুধবার স্ট্যালিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন,'পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের এক পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চেন্নাইয়ে এসেছি। স্ট্যালিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলাম। ও আমার ভাইযের মতো। চেন্নাইয়ে এসে ওর সঙ্গে দেখা করব না তা কি হয়! এখানকার চা বিখ্যাত, দু'জনে চা খেলাম।' এর পরে অবশ্য মমতা নিজেই স্পষ্ট করে দেন এ সাক্ষাৎ নিছক সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়। তিনি বলেন,' এই বৈঠক আগে থেকে ঠিক ছিল না। দু'জন রাজনীতির মানুষ দেখা হলে তো রাজনীতির কথা হবেই। তবে কোনও রাজনৈতিক দল নিয়ে কোনও কথা বলব না। উন্নয়নের কথাও হল।' তবে তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী একে ‘সৌজন্য সাক্ষাৎকারই’ বলেছেন। দু'দিনের সফর সেরে বৃহস্পতিবারই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেন্নাই থেকে কলকাতায় ফেরার কথা রয়েছে।