লোকসভা ভোটের আগেই দেশ জুড়ে চালু হয়ে যেতে পারে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই সংসদে একথা জানিয়েছিলেন। এমনকি কলকাতায় সভা করতে এসেও এই নিয়ে আশ্বাসবাণী দিয়েছিলেন শাহ। এই নিয়ে সোমবারই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিল মোদী সরকার। সোমবার সন্ধ্যায় এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তার আগেই তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন থেকে মমতা স্পষ্ট বলেন, যদি কোনও বৈষম্য হয় সে জিনিস আমরা মানি না। ধর্ম বৈষম্য, বর্ণ বৈষম্য বা লিঙ্গ বৈষম্য হোক, আমরা চাই না।
'নির্বাচনের আগে বলা হবে ক্যা দেবে, ওটা ক্যা দেবে না, ব্যা দেবে। মানে ব্যাক আউট করবে।...নির্বাচনের পরে আপনাদের সব কেড়ে নেওয়া হবে...আপনাদের ওপার বাংলায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু আমরা আপনাদের আশ্রয় দেব', গত কাল, রবিবার ব্রিগেডের জনগর্জন সভা থেকে মতুয়াদের উদ্দেশে এই বার্তাই ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার পর, আজই সিএএ-র বিজ্ঞপ্তি জারি করল শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আর এই নিয়েই সোমবার বিকেলে গর্জন করে উঠলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মমতা হুঁশিয়ারি দিয়ে স্পষ্ট করে দেন বাংলায় সিএএ চালু করতে দেবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘সাহস থাকলে আগে করতেন। লোকসভা ভোটের আগে করতে হল কেন?’’
বিকেলে নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘জরুরি প্রেস কনফারেন্স করতে হচ্ছে৷ বিজেপির এটা কাজ, আগেই টিভিগুলোকে খাইয়ে দেওয়া৷ কোন সালে সিএএ পাশ করা হয়েছিল? তার পর বারবার এক্সটেনশনে চার বছর লেগে গেল৷ এটা একটা রাজনৈতিক পরিকল্পনা৷ ২০২০ সালে সিএএ আইন পাশ হয়, বলা হচ্ছে এটি নাকি আজকেই ঘোষণা করা হবে৷ এটা একটা রাজনৈতিক পরিকল্পনা৷ যদি কোনও বৈষম্য হয়, আমরা সেটা মানি না৷’ এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী যোগ করেন, ‘আমি প্রথমেই আপনাদের জানিয়ে রাখি, আমি পুরোটা দেখে, হাবড়ার মিটিং থেকে বলব৷ তবে আজকে আমি যেটা বলতে চাই, কোনও বৈষম্য আমরা মানি না৷ ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বৈষম্য মানি না৷ আমার মনে হচ্ছে, এটা একটা শো-অফ৷ সেই জন্যই কি আধার কার্ড বাতিল করার চক্রান্ত হল? আজকে যদি কাউকে বলে, এ বার আপনি নাগরিক, কেন, তাঁরা কি আগে নাগরিক ছিলেন না? আমরা বলি, আমরা সবাই নাগরিক, এটাই আমাদের থিওরি৷’
বাংলার মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন, ‘আগে যে সুযোগগুলো তাঁরা পেতেন, সেটা কি অবৈধ হবে না? বৈধ হবে? তাহলে যাদের জন্য সিএএ হয়েছে, তাঁদের ভোটেই তো প্রধানমন্ত্রী,মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন।তাহলে কী তাদের ভোটের কোনও মূল্য নেই? কারওর নাগরিকত্ব বাতিল হলে, আমরা চুপ থাকব না, আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ কর, সিএএ-এর নাম করে কাউকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানো মানব না৷ তবে আমি অপেক্ষা করছি, পুরো আইনটি দেখার জন্য৷ পশ্চিমবঙ্গ ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলির জন্য এটি খুবই সেনসিটিভ৷’