ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটে বিজেপির তরফে বাংলার ইনচার্জ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বনমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদবকে। আর তাঁকে সাহায্য করবেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। এই ঘোষণার পরই রাজনৈতিক মহলে নতুন করে চর্চা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘোষণা থেকেই পরিষ্কার শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য, সুকান্ত মজুমদারদের মতো রাজ্যের নেতাদের জন্য কৌশল ঠিক করে দেবেন ভূপেন্দ্র যাদব।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, পশ্চিমবঙ্গকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা। সেই কারণেই এত তাড়াতাড়ি ভূপেন্দ্র যাদবের নাম ঘোষণা করা হল। নির্বাচনী রাজনীতিতে তাঁর যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই তাঁকেই বাংলার মতো দুর্জয় ঘাঁটির দায়িত্ব দেওয়া হল। বিপ্লব দেবের নেতৃত্বেই ত্রিপুরায় প্রথম ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। তাই তাঁকেই রাখা হয়েছে ভূপেন্দ্রর সহকারী হিসেবে।
কেন ভূপেন্দ্রকে দায়িত্ব?
বাংলায় দীর্ঘদিন ধরে সরকার গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বিজেপি৷ দলের সভাপতি থাকার সময় বা পরেও অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, তিনি পশ্চিমবঙ্গে সরকার গড়তে চান। সেজন্য প্রয়োজনীয় বঙ্গ বিজেপিতে নতুন মুখের আমদানি করিয়েছিলেন। তবে তাতে আশাব্যঞ্জক ফল মেলেনি। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপি সর্বশক্তি দিয়ে লড়লেও কাঙ্খিত ফল পায়নি। আবার ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে ২০১৯ এর থেকেও খারাপ ফল হয়। এই প্রেক্ষাপটে ছাব্বিশের বিধানসভায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভূপেন্দ্র যাদবকে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, ভূপেন্দ্রকে বাংলায় দায়িত্ব দেওয়ার পিছনে রয়েছে তাঁর ট্র্যাক রেকর্ড। ২০২০ সালে তিনি একই দায়িত্বে ছিলেন বিহারের। সেখানে তিনি চমকপ্রদ ফল এনে দেন। বিজেপি এনডিএ জোটের মধ্যে এককভাবে বৃহত্তম দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
এর আগেও একাধিক রাজ্যের ভোটে নিজের দক্ষতার প্রমাণ বারবার দিয়েছেন ভূপেন্দ্র। রাজস্থান, গুজরাত এবং মহারাষ্ট্রের মতো চ্যালেঞ্জিং রাজ্যের দায়িত্বও পালন করেছিলেন তিনি। সেই সব জায়গায় দলের নির্বাচনী কৌশল ঠিক করা, নবীন-প্রবীণের দ্বন্দ্ব মেটানোর মতো গুরুত্বপূর্ণ সাংগঠনিক কাজ করেছেন।
কেন বিপ্লব দেবকেও দায়িত্ব?
একথা সবাজ জানা এই বিপ্লব দেবের নেতৃত্বেই ত্রিপুরায় ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি। সেবার মুখ্যমন্ত্রীও করা হয় তাঁকে। পরে ২০২৪ সালে হরিয়ানায় BJP-র ইনচার্জ নিযুক্ত করা হয় তাঁকে। সেখানে সাফল্য এনে দিয়েছিলেন তিনি। আর হরিয়ানায় বিজেপির জয়ের পর বিপ্লবকে দিল্লির ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। অরবিন্দ কেজরিওয়াল যে কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছিলেন, সেখানকার ভোট কুশলী ছিলেন দেব। তাতেও সাফল্য মেলে তাঁর।