Shamik Bhattacharya: কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে নির্ধারিত সদস্য সংখ্যা বাড়াতে কালঘাম ছুটেছে রাজ্য বিজেপির। ইতিমধ্যেই তাঁরা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে ১ কোটি সদস্য় সংগ্রহের জন্য বাড়তি সময় চেয়েছেন। এসবই এখন পুরনো খবর। পশ্চিমবাংলার বিজেপি নেতৃত্ব যে চাপে আছেন, রাজনৈতিক খবর যাঁরা রাখেন, তাঁরা সবাই জানেন। কিন্তু তাই বলে বিয়ের নেমন্তন্ন খেতে গিয়ে নববধূকে সদস্য় করে নেবেন তাঁরা এমনটা ভাবা যায়নি। এমনই ঘটনা ঘটিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য। রাজনৈতিক মহলে এ নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক চর্চা।
নভেম্বরের মধ্যে ১ কোটি সদস্য সংগ্রহ অভিযান শেষ করতে হবে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সময় সীমা বেঁধে দিয়েছেন। সেই লক্ষ্যে প্রতি দিন বিভিন্ন বিধানসভা এলাকায় গিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সদস্য সংগ্রহ করছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে দলের অন্যান্য নেতা, সাংসদ, বিধায়ক ও স্থানীয় নেতারা। তার মধ্যেই শমীক ভট্টাচার্য যা করে ফেললেন, তাতে একদিকে যেমন বিজেপি নেতৃত্বের মরিয়া ভাব ফুটে উঠেছে, অন্য়দিকে কতটা চাপে রয়েছেন সেটাও পরিষ্কার। বিজেপি সাংসদ শমীক শনিবার রাতে বিয়ের নেমন্তন্ন রক্ষা করতে গিয়ে নববধূকে দিয়ে মিসকল করিয়ে বিজেপির সদস্য করে নিলেন!
এরপর শমীক জানান, সকলের সামনে কনে সদস্য হওয়ার পরে বিয়েবাড়িতে আমন্ত্রিতেরাও অনেকে ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। এর পরে কার্যত একটি ক্যাম্প বসাতে হয়। শমীকের সঙ্গে যাওয়া কর্মীরাই সেই ক্যাম্প চালান এবং জনা কুড়ি সদস্য সংগ্রহ করেন। বিজেপি কর্মীদের আফসোস, বিয়েতে রাত হয়ে যায়, নইলে আরও কিছু লোককে সদস্য করা সম্ভব হত।
শনিবার কামারহাটি এলাকায় একটি বিয়েতে আমন্ত্রিত ছিলেন বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। সেখানেই নেমন্তন্ন রক্ষা করতে গিয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে আরও কয়েক জন দলীয় কর্মী ছিলেন। কনেকে উপহার তুলে দেওয়ার পরই তাঁরা ওই বধূকে সদস্য করান। বিজেপি সূত্রের খবর, উপহার দেওয়ার পরে কনে নিজে থেকেই সদস্য হয়ে রিটার্ন গিফট দিতে চান। কনের হাতে তখন তাঁর মোবাইল ফোনটি ছিল না। কনের বাড়ির লোকেরা সঙ্গে সঙ্গেই মোবাইল ফোনটি এনে দিলে তাঁরা সদস্য করার জন্য নির্দিষ্ট নম্বরে মিসকল করেন।
অমিত শাহ ১ মাসে ১ কোটি সদস্য করার টার্গেট দিয়েছিলেন। অমিত শাহ নিজে সেই কর্মসূচির উদ্বোধন করেছিলেন। কিন্তু বাস্তবে সদস্য করতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে সহজে লক্ষ্যপূরণ হচ্ছে না। বঙ্গ–বিজেপির নেতারা বলছেন, অন্য রাজ্যগুলি আড়াই মাস সময় পেয়েছিল। কিন্তু এই রাজ্যে দুর্গাপুজো ছিল। তাই সেই সময় পাওয়া যায়নি। ইতিমধ্যেই রাজ্য় বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বাড়তি সময় চেয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দরবার করেছেন।
এছাড়া অক্টোবর মাসের ২৭ তারিখ বঙ্গ সফরে এসে সাংগঠনিক বৈঠকে নেতৃত্বকে এক কোটি সদস্য করার টার্গেট বেঁধে দেন অমিত শাহ। এখনও পর্যন্ত সে অর্থে এই সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে বিরাট কোনও সংখ্যায় পৌঁছতে পারেনি বঙ্গ–বিজেপির নেতারা। নিজের ফেসবুক পেজে ছবি শেয়ার করেছেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘যেখানেই যাবেন সেখানেই সদস্যতা, হোক না সেটা বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠান।’ শমীক সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য বাংলার প্রত্যেকটি ভোটারকে বিজেপির সদস্য করা।’ কদিন আগে সার্দান অ্যাভিনিউ এলাকায় জগদ্ধাত্রী পুজো মণ্ডপেও সদস্য সংগ্রহ করেন শমীক ভট্টাচার্য।