রাজস্থান, ওড়িশা, ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্র- এরকম একাধিক বিজেপি ও NDA শাসিত রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার ও তাদের হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে সরব হয়ে পথে নেমেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বীরভূম থেকে ভাষা আন্দোলনের সূচনার দিনে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতে দেখা গিয়েছিল, তার দেড় বছরের শিশু ও স্ত্রীকে কীভাবে মেরেছে দিল্লি পুলিশ, সেই বর্ণনা দিচ্ছেন এক ব্যক্তি। সেই ভিডিয়োকে হাতিয়ার করেই বিজেপির দিকে তোপ দেগেছিলেন মমতা। লিখেছিলেন, 'এই দেশে বাঙালিদের বিরুদ্ধে বিজেপির শুরু করা ভাষা সন্ত্রাসের হিংসা থেকে পরিত্রাণ পেল না একটা শিশুও। দেশকে এরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে?' মুখ্য়মন্ত্রীর সেই দাবি খারিজ করেছেন পূর্ব দিল্লি পুলিশের ডিসিপি অভিষেক ধানিয়া। মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের দাবিকে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার বলা হয়েছে দিল্লি পুলিশের তরফে।
দিল্লি পুলিশ দাবি করেছে, মালদার রাজনৈতিক কর্মী তথা এক আত্মীয়ের কথাতেই এইভিত্তিহীন ভিডিও। পূর্ব দিল্লির ডিসিপি অভিষেক ধানিয়ার বক্তব্য , 'স্থানীয় গোয়েন্দার মাধ্যমে সেই ভিডিয়োর ভিত্তিতে তদন্তে নামে দিল্লি পুলিশ। নানা প্রযুক্তিগত পরীক্ষানিরিক্ষাও করা হয় এবং সেই ভিত্তিতেই একাধিক প্রমাণ জড়ো করে তদন্তকারী দল। সেই প্রমাণ নথির ভিত্তিতে আমরা ওই ভিডিয়োয় দেখানো পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করি। তখনই আসল সত্যিটা বেরিয়ে আসে। আমরা জানতে পারি, ওই পরিবার ভিডিয়োটা তৈরি করেছিল তাদের এক আত্মীয়র কথায়। যাকে আবার নির্দেশ দিয়েছিল মালদহের এক নেতা। এই ভিডিয়ো সম্পূর্ণ ভাবে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।' দিল্লি পুলিশের তুলে দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু অধিকারীর সাফ কথা, 'গুজব এবং মিথ্যে খবর রটাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কারণে তিনি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পর্যন্ত পেতে পারেন!' বিরোধী দলনেতা বলেন,'দিল্লিতে বাঙালি হেনস্থার যে অভিযোগ মমতা করেছেন তা যে ভুয়ো সেটা প্রমাণিত। মালদার এক তৃণমূল নেতার ইন্ধনে ওই ভিডিও করা হয়েছিল। এতেই পরিষ্কার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ভুয়ো, মিথ্যে খবর রটাচ্ছেন। এর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়া উচিত।' নন্দীগ্রামের বিধায়কের বক্তব্য, দিল্লিতে থাকা বাঙালিদের উচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এইসব ভুয়ো পোস্টের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর করা। পাশাপাশি দিল্লি পুলিশ যেন সেই এফআইআরের ভিত্তিতে তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা এও জানান, কাঁথির সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারীকে তিনি ফোনে বলেছেন, মঙ্গলবার সংসদের অধিবেশন শেষ হয়ে যাওয়ার পর দিল্লি পুলিশের সাইবার সেলে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম এফআইআর দায়ের করতে।