West Bengal Election 2026: মমতাকে ব্যক্তি আক্রমণ নয়, ৮৩টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়েও নয়া রণকৌশল বিজেপির

নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিতে বদল আনল গেরুয়া শিবির। আর নয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যক্তি আক্রমণ। এবার নতুন করে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে BJP। ছাব্বিশের নির্বাচন নিয়ে কী কী পরিকল্পনা রয়েছে তাদের?

Advertisement
মমতাকে ব্যক্তি আক্রমণ নয়, ৮৩টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন নিয়েও নয়া রণকৌশল বিজেপিরমমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ব্যক্তি আক্রমণ করবে না BJP
হাইলাইটস
  • ছাব্বিশের নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি বদল ফেলল BJP
  • এবার থেকে আর মমতাকে আক্রমণ নয়
  • কোন চালে ভোটে জেতার পরিকল্পনা BJP-র?

আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে নিজেদের রণকৌশল বদলে ফেলল BJP। এবার থেকে গেরুয়া শিবির আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ করবে না। বরং ফোকাসে থাকবে দুর্নীতি ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। দিদির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে BJP নেতাদের আর সরব হতে দেখা যাবে না আগের মতো। কিন্তু আচমকা কেন এই স্ট্র্যাটেজি?

২০২৬ সালে অনুষ্ঠিত হতে চলা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের আগে BJP তাদের নির্বাচনী কৌশলে বড় পরিবর্তন আনছে। ২০২১ সালের নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার দলটি সম্পূর্ণ নতুন ভঙ্গিতে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে BJP-র গোটা প্রচার অভিযানের কেন্দ্রবিন্দুতেই ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহ বহু BJP নেতা প্রচারের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত মন্তব্য করেছিলেন, যা বাংলার ভোটারদের পছন্দ হয়নি বলেই মনে করছে দল। বিশেষ করে একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রমণ নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল, যার সরাসরি লাভ ঘরে তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস। 

এই অভিজ্ঞতার পর BJP এবার ঠিক করেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কোনও ব্যক্তিগত মন্তব্য করা হবে না। বরং BJP এখন তাঁর শাসনকালের দুর্নীতি, প্রশাসনিক ব্যর্থতা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতিকে কেন্দ্র করে আক্রমণাত্মক প্রচার চালাবে। দলটি দুর্নীতিকেই বড় নির্বাচনী ইস্যু হিসেবে তুলে ধরতে চলেছে। TMC-র যেসব নেতা ও মন্ত্রী বর্তমানে দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত অথবা জেলবন্দি, তাদের বিরুদ্ধে BJP শীঘ্রই একটি সংগঠিত প্রচার অভিযান শুরু করবে। একইসঙ্গে সম্প্রতি আরজি কর সহ পরপর যে সমস্ত ধর্ষণের ঘটনাগুলি সামনে এসেছে, সেগুলিকে মহিলা নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত ইস্যু হিসেবে তুলে ধরার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে গেরুয়া শিবিরে। 

অন্যদিকে, এবার BJP বাইরের নেতাদের পরিবর্তে রাজ্যের পুরনো ও বিশ্বস্ত কর্মীদের পর ভরসা রাখবে। যেসব নেতা কঠিন সময়েও দল ছেড়ে যাননি, তাদের সঙ্গে নতুন করে যোগাযোগ করা হবে। প্রার্থীদের নির্বাচন এবং প্রচার কৌশল স্থানীয় কর্মীদের মতামতের ভিত্তিতেই নির্ধারণ করা হবে। BJP রাজ্যের প্রতিটি বুথে সংগঠনকে আরও সক্রিয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রচারে বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে, যাতে স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে আবেগের সম্পর্ক গড়ে তোলা যায়। দলটি বিশেষভাবে নারীদের ও যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে “ডবল ইঞ্জিন সরকার” অর্থাৎ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার একসঙ্গে কাজ করলে তার সুফল কতটা, সেই বার্তা পৌঁছে দিতে মনোযোগ দেবে। 

Advertisement

রাজ্যের ৮৩টি মুসলিম-অধ্যুষিত আসনে BJP অতিরিক্ত জোর না দিয়ে সেখানে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করার কৌশল নেবে। এই কাজ শুরু হবে বিহার নির্বাচনের পর থেকেই, বিশেষত TMC-র শক্ত ঘাঁটিগুলিতে। BJP-র মূল নজর থাকবে কলকাতা ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায়, কারণ এখান থেকেই TMC-র বহু শীর্ষ নেতা ভোটে দাঁড়াতে পারেন এবং এখানেই BJP-কে নিজেদের অবস্থান আরও শক্ত করতে হবে। দলীয় কৌশলবিদদের মতে, পশ্চিমবঙ্গে এবার BJP সংঘাত নয়, বরং পরিকল্পিত রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাঁড়াশি চাপে ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ব্যক্তিগত আক্রমণ নয়, এবার লড়াই হবে বাস্তব ইস্যু ও শাসনের প্রশ্নে।

 

POST A COMMENT
Advertisement