Pahalgam Attack: 'আমার কপালে সিঁদুর দেখল, বিতানকে মেরে দিল,' শোক-আতঙ্কের মধ্যে ক্ষোভে ফুঁসছেন সোহিনী

পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকার রিসর্টে সেনার পোশাকে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হওয়া পর্যটকদের অনেকে বলছেন, প্রথমে সেনাবাহিনীর উর্দি পরে কয়েকজন সামনে আসে। বিতানের স্ত্রী সোহিনী অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবরকম ভাবে তাঁর পাশে থাকার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর বিতানের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। পরে শুভেন্দু অধিকারী জানান, সোহিনীর সঙ্গে ফোনে তাঁর প্রায় ১০ মিনিট কথা হয়েছে। বিতানের স্ত্রী সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

Advertisement
'আমার কপালে সিঁদুর দেখল, বিতানকে মেরে দিল,' শোক-আতঙ্কের মধ্যে ক্ষোভে ফুঁসছেন সোহিনীবিতানের নিথর দেহ নিয়ে ঘরে ফিরলেন সোহিনী

কলকাতায় ফিরেছে  পহেলগাঁওয়ে  মৃত ২ পর্যটকের দেহ। বুধবার রাত ৮ টা নাগাদ দমদম বিমানবন্দরে এসে পৌঁছয় বিতান অধিকারী ও সমীর গুহর কফিনবন্দি দেহ। দুজনেই পরিবারের সঙ্গে কাশ্মীর ঘুরতে গিয়েছিলেন। রাজ্যের আরও এক বাসিন্দা মণীশ রঞ্জনের দেহ রাঁচি হয়ে তাঁর পুরুলিয়ার বাড়িতে পৌঁছবে। বিমানবন্দর থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে চাপিয়ে পাটুলি বৈষ্ণবঘাটার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয় বিতান অধিকারীর কফিনবন্দি দেহ, অন্যদিকে একই ভাবে মৃত সমীর গুহর দেহ নিয়ে বেহালার সখের বাজারের বাড়িতে ফেরেন তাঁর পরিবারের লোকজন। 

  নিহত বিতান অধিকারীর বাড়ি নেতাজিনগর থানা এলাকার বৈষ্ণবঘাটা লেনে।  স্ত্রী ও ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন তিনি।  মঙ্গলবার কাঁধে গুলি লাগে বিতান অধিকারীর। পরে অবস্থার অবনতি হলে মৃত্য়ু হয় তাঁর। আতঙ্কের ঘোর কাটাতে পারছেন না স্ত্রী।  তিন বছরের সন্তানকে কোলে আঁকড়ে  বিতান অধিকারীর স্ত্রীর দিলেন ভয়ঙ্কর তথ্য,' কপালে সিঁদুর ছিল আমার, তাতেই মেরে দিল ওকে।'

১৮ তারিখ স্ত্রী সোহিনী ও  পুত্রকে নিয়ে কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়েছিলেন ফ্লোরিডায় কর্মরত বিতান। তাঁর স্ত্রী সোহিনীও সেখানে বহুজাতিক সংস্থায় কর্মরত। ছুটিতে তাঁরা কলকাতার বাড়িতে ফিরেছিলেন। এরপর ১৮ তারিখ কাশ্মীর ঘুরতে যান। বৃহস্পতিবার তাঁদের বাড়ি ফেরার কথা ছিল। অভিশপ্ত ২২ তারিখ পহেলগাঁওর বৈসরনে অভিশপ্ত সেই রিসর্টে ছিলেন বিতান। ঠিক কী করেছিল জঙ্গিরা? বাঙালি পর্যটকের মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই বিতানের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। বিতানের স্ত্রীর মুখে উঠে আসে ভয়াবহ বর্ণনা। তিনি বলেন, “ওরা বলছিল, যারা যারা মুসলিম সরে যান। কালমা বলুন, আর মেরে দিল। যাদের কপালে সিঁদুর দেখেছে মেরে দিল।” সোহিনীর চোখের সামনেই শেষ হয়ে যান বিতান।

পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকার রিসর্টে সেনার পোশাকে ঢুকে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হওয়া পর্যটকদের অনেকে বলছেন, প্রথমে সেনাবাহিনীর উর্দি পরে কয়েকজন সামনে আসে। বিতানের স্ত্রী সোহিনী অধিকারীর সঙ্গে কথা বলেন মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবরকম ভাবে তাঁর পাশে থাকার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার পর বিতানের স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। পরে শুভেন্দু অধিকারী জানান, সোহিনীর সঙ্গে ফোনে তাঁর প্রায় ১০ মিনিট কথা হয়েছে। বিতানের স্ত্রী সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। 

Advertisement

শুভেন্দু জানিয়েছেন, কীভাবে গোটা ঘটনাটি ঘটেছে তা তাঁকে বলেছেন সোহিনী। কীভাবে দুই সশস্ত্র জঙ্গি তাঁদের দিকে এগিয়ে আসে এবং মুসলিম ও অ-মুসলিম পর্যটকদের আলাদা করতে বলে। মুসলিমদের ছেড়ে দেওয়া হয়, আর হিন্দু পুরুষ, নারী ও শিশুদের আলাদা করা হয়। এরপর হিন্দু পুরুষদের ‘কলমা’ পাঠ করতে বলা হয়, যা কেউই পারেননি।  শুভেন্দু অধিকারীরকথায়, এই ঘটনার পরই গুলি ছোড়া শুরু করে জঙ্গিরা। স্ত্রীর চোখের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় বহু হিন্দু পুরুষকে। বিজেপি নেতার দাবি, শুধু হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ার জন্যই এই নির্মম হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে।

 বিতানের দেহ নিয়ে সোহিনী ফিরতেই বিমানবন্দরে রাজ্যের তরফে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, অগ্নিমিত্রা পালেরা। শুভেন্দু বিমানবন্দরে বিতানের ছোট ছেলেকে কোলে তুলে নেন। শুভেন্দুকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিতানের স্ত্রী সোহিনী। সরকার জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে বিতান অধিকারীর স্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন শুভেন্দু।

POST A COMMENT
Advertisement