Building Collapses in Kolkata: আপনার বাড়িও হেলে পড়বে না তো? কীভাবে আগেই বুঝবেন? খোঁজ নিল bangla.aajtak.in

কলকাতায় একের পর এক বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা শহরবাসীর মনে ভয় এবং আশঙ্কা তৈরি করেছে। আচমকা একদিন হ্যান্ড মাইকে পুলিশের ঘোষণা—“বাড়ি ছাড়তে হবে!” তারপর শুনলেন, পুরসভা গোটা বাড়ি ভেঙে দিতে চায়। জল এবং বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন। আপনি কোথায় যাবেন? এই প্রশ্ন এখন বহু বাসিন্দার মনে।

Advertisement
আপনার বাড়িও হেলে পড়বে না তো? কীভাবে আগেই বুঝবেন? খোঁজ নিল bangla.aajtak.inকলকাতায় হেলে পড়া বাড়ি।-গ্রাফিক
হাইলাইটস
  • কলকাতায় একের পর এক বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা শহরবাসীর মনে ভয় এবং আশঙ্কা তৈরি করেছে।
  • আচমকা একদিন হ্যান্ড মাইকে পুলিশের ঘোষণা—“বাড়ি ছাড়তে হবে!” তারপর শুনলেন, পুরসভা গোটা বাড়ি ভেঙে দিতে চায়।
  • জল এবং বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন। আপনি কোথায় যাবেন? এই প্রশ্ন এখন বহু বাসিন্দার মনে।

কলকাতায় একের পর এক বাড়ি হেলে পড়ার ঘটনা শহরবাসীর মনে ভয় এবং আশঙ্কা তৈরি করেছে। আচমকা একদিন হ্যান্ড মাইকে পুলিশের ঘোষণা—“বাড়ি ছাড়তে হবে!” তারপর শুনলেন, পুরসভা গোটা বাড়ি ভেঙে দিতে চায়। জল এবং বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন। আপনি কোথায় যাবেন? এই প্রশ্ন এখন বহু বাসিন্দার মনে।

কেন হেলছে বাড়ি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, বাড়ি তৈরির সময় নিয়ম মেনে কাজ না করার কারণেই এমন বিপর্যয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাটি পরীক্ষা এবং রিপোর্ট তৈরি না করেই নির্মাণকাজ শুরু হয়। স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ বা উপযুক্ত যন্ত্রপাতি ব্যবহারও করা হয় না। এমনকি হেলে পড়া বাড়ি মেরামতের সময় ‘লিফটিং’ বা জ্যাকিং প্রক্রিয়াতেও প্রযুক্তিগত নিয়ম মানা হয়নি।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিল্ডিং বিভাগের অতিথি অধ্যাপক বিশ্বজিৎ সোমের পর্যবেক্ষণ বলছে, 'কলকাতার মাটি অত্যন্ত নরম। এখানে সর্বাধিক ৫ তলা বাড়ি করা যেতে পারে, তবে ৪ তলার বেশি বাড়ি না করাই ভালো। যেসব বাড়ি হেলেছে, সেগুলো ৫ বা ৬ তলা। এই অতিরিক্ত উচ্চতার কারণে বাড়িগুলো মাটিতে বসে গেছে।'

বিশ্বজিৎ সোম আরও বলেন, 'সব বাড়িই হেলে পড়ার ঝুঁকিতে নেই। তবে যেসব বাড়ি হেলেছে, সেগুলো সোজা করা অত্যন্ত জটিল কাজ। কারণ জ্যাকিংয়ের জন্য যেসব সংস্থা নিয়োগ করা হয়, তাদের অধিকাংশের কলকাতার মাটির চরিত্র সম্পর্কে ধারণা নেই।'

জ্যাকিং কতটা নিরাপদ?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, 'কলকাতার নীচে রয়েছে কাদা মাটি বা অর্গানিক সয়েল, যা অত্যন্ত দুর্বল। এই ধরনের মাটিতে জ্যাকিং প্রক্রিয়া নিরাপদ নয়। হরিয়ানা বা দিল্লির সংস্থাগুলি এই কাজ করছে ঠিকই, কিন্তু কলকাতার মাটির প্রকৃতি সম্পর্কে তাদের অজ্ঞতা সমস্যাকে আরও বাড়াচ্ছে।'

নির্মাণে গাফিলতি এবং দায় কার?
কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের রিপোর্ট অনুযায়ী, বেশিরভাগ বাড়ি অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হয়েছে। নির্মাণ প্রক্রিয়ায় পুরসভার অনুমোদন বা জাতীয় বিল্ডিং নিয়ম মানা হয়নি। এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রোমোটার এবং বাসিন্দাদের সমান দায় রয়েছে।

পুরসভার এক বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার বললেন, 'বাসিন্দারা অনুমোদন ছাড়া বাড়ি কেনা বা তৈরি করেন। অথচ বাড়ির নকশা বা স্ট্রাকচারাল ড্রয়িং পরীক্ষা করানো উচিত।'

Advertisement

বাড়ি যাতে হেলে না পড়ে, কী করবেন?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ:

বাড়ি তৈরির আগে মাটি পরীক্ষা এবং স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ নিন।
পুরসভা বা জাতীয় বিল্ডিং নিয়ম অনুযায়ী অনুমোদন নিয়ে কাজ শুরু করুন।
অ্যাপ্রুভড নকশা ছাড়া বাড়ি তৈরি করবেন না।

হেলে পড়া বাড়ি কীভাবে সামাল দেবেন?
হেলে যাওয়া মানেই বাড়ি ভেঙে পড়বে, এমন নয়। বাড়ি অতিরিক্ত চাপ সহ্য করতে পারছে কিনা, তা পরীক্ষা করতে হবে। প্রয়োজন হলে স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারের পরামর্শ নিয়ে জ্যাকিং বা ভাঙার সিদ্ধান্ত নিন। তবে ভাঙার কাজও দক্ষ কর্মীদের মাধ্যমেই পরিকল্পিত উপায়ে করতে হবে।

পুরসভার ভূমিকায় প্রশ্ন
পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের রিপোর্টে বলা হয়েছে, বেশিরভাগ বাড়ি অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হয়েছে। এজন্য প্রোমোটারদের অভিযুক্ত করা হলেও, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ারদেরও শো-কজ করা হয়েছে।

এদিকে, কলকাতা পুরসভার ‘বিল্ডিং’ বিভাগের প্রধান মেয়র ফিরহাদ হাকিম নিজে। তাঁর বিধানসভা এলাকা গার্ডেনরিচে গত বছর একটি বহুতল ভেঙে পড়েছিল। বাঘাযতীনে হেলে পড়া বহুতলটিও এক মেয়র পারিষদের এলাকায়। পরপর একই ধরনের ঘটনায় পুরসভার ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।


 

POST A COMMENT
Advertisement