কলকাতা হাইকোর্টেও কি 'গেরুয়াকরণ'? আদালতের ছুটির তালিকা দেখে এমন অভিযোগই করছে বিভিন্ন মহল। বিষয়টা কী? আসলে এবার হাইকোর্টের ছুটির তালিকায় নয়া সংযোজন 'রাম নবমী'। আর এই সিদ্ধান্ত নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে আইনজীবীদের একাংশ।
এককালে হাইকোর্টে মে দিবসের ছুটি দেওয়া হত। ২০১৭ সালে সেই ছুটি বাতিল হয়। তার কারণ দর্শানো হয়নি। এবার সেই ছুটির তালিকায় জুড়ল 'রাম নবমী'। হঠাৎ কেন এই সিদ্ধান্ত? কলকাতা হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশনে সচিব শঙ্করপ্রসাদ দলপতির ব্যাখ্যা,'হাইকোর্টের ক্যালেন্ডার থেকে ছুটি বাতিল হয়নি। একটা ছুটি সংযোজিত হয়েছে। গত বছরের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২১০-২১৪ দিন কর্মদিবস ছিল। সেটাই মেনে চলা হয়েছে'।
শ্রমিক দিবস অর্থাৎ মে দিবসের ছুটির আবেদন করলেও তা গৃহীত হয়নি বলে দাবি করলেন আইনজীবী ফিরদৌস শামীম। তাঁর কথায়,'কোনও উৎসবে ছুটি থাকবে কিনা, সেটা বিচারব্যবস্থা ঠিক করবে। রাম নবমীতে ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। শ্রমিকদের সম্মান জানিয়ে মে দিবসের ছুটি দেওয়া উচিত। ছুটি না দেওয়া হলে তা অসম্মান জানানোর শামিল। কিন্তু ছুটির ক্যালেন্ডারে মে দিবস-কে ঠাঁই দেওয়া হয়নি'।
স্বাভাবিকভাবেই রাম নবমীর ছুটির পক্ষে সওয়াল করেছেন বিজেপিপন্থী আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। তাঁর কথায়,'যাদের কোনও কাজ নেই তারা বিতর্ক করে। রামের দেশে রাম নবমীতে ছুটি হবে না তো কবে হবে? এটাই স্বাভাবিক। এটা নিয়ে হইহই করার কিছু নেই। শ্রম দিবসে শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হোক, কোনও আপত্তি নেই। আমাদের নো ওয়ার্ক নো পে'।
এ ব্যাপারে সাবধানী মন্তব্য করেছেন তৃণমূলপন্থী আইনজীবীরা। তাঁদের বক্তব্য,'রথযাত্রা, বুদ্ধপূর্ণিমাতেও ছুটি পেয়েছি। রাম নবমীতে ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিচারপতিরা। এটা একটা ছুটি হিসাবেই দেখছি। গেরুয়াকরণ বলতে চাই না। রাম আর কৃষ্ণের পুজো সবাই করে। বিতর্কের অবকাশ নেই'।
সংবাদদাতা- মানস নস্কর