সরকারের তরফে এবার শারদোৎসবের অনুদানের পরিমাণ বাড়ান হয়েছে। পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, এবছর সমস্ত পুজো কমিটিকে সরকারের তরফে এক লক্ষ ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। আগের বছরের তুলনায় ২৫ হাজার টাকা বাড়ানো হল এই অঙ্ক। এই ঘোষণায় স্বভাবতই খুশি পুজো উদ্যোক্তারা। সেইসঙ্গে বিদ্যুৎ খরচ ৮০ শতাংশ কমছে। ফায়ার লাইসেন্স ও যাবতীয় সরকারি ফি মকুব করা হয়েছে। তবে এবারেও দুর্গাপুজোর অনুদান নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। সোমবার সেই সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে যে সব দুর্গাপুজো কমিটি খরচের হিসাব দেয়নি, তাদের কেন অনুদান দেওয়া হল? তা নিয়ে রাজ্যের অবস্থান কী, জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট।
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুজয় পাল এবং বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলা শুনানির জন্য ওঠে। দুর্গাপুজোয় সরকারি অনুদান নিয়ে গত বছর (২০২৪ সাল) পর্যন্ত কতগুলি ক্লাব খরচের হিসাব পেশ করেছে এবং কোন কোন ক্লাব তা দেয়নি, সেই সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য হলফনামা আকারে জমা দিতে বলা হয় রাজ্যকে। সোমবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সুজয় পালের ডিভিশন বেঞ্চ। এই হলফনামা দেওয়ার জন্য রাজ্যকে ৪৮ ঘণ্টার সময় বেঁধে দিয়েছে আদালত। সেখানেই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, সরকারি অনুদান নিয়ে কোথায় কত টাকা খরচ হচ্ছে, তা নিয়ে পুজো কমিটিগুলিকে ‘ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট’ জমা করার কথা বলা হয়েছিল আগেই। কত পুজো কমিটি ওই সার্টিফিকেট জমা দেয়নি? না দেওয়া সত্ত্বেও সেই কমিটিগুলিকে কী অনুদান দেওয়া হচ্ছে?
আদালতের বক্তব্য, যে সমস্ত ক্লাব সরকারি অনুদান নিয়েও হিসাব দিচ্ছে না, তাদের নিয়ে ভাবনা-চিন্তার প্রয়োজন রয়েছে। প্রয়োজনে তাদের অনুদান বন্ধ করা হোক। আদালতের পর্যবেক্ষণ, আগের সব নির্দেশে ক্লাবগুলিকে হিসাব দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছিল। এদিন রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল আর্জি জানান, অনুদান দেওয়া নিয়ে কোনও আদালত আপত্তি করেনি। তাই পুজোর পরে এই মামলার শুনানি হোক। তার আগে হলফনামা জমা দেবে রাজ্য। যদিও তাতে আপত্তি তোলেন বিচারপতি পাল। আদালতের বক্তব্য, ‘পুজোর পরে আর এই মামলার গুরুত্ব কী? কোর্ট বারবার যে সঠিক হিসেব দেওয়ার কথা বলেছে, সেই হিসেব দেওয়ার হচ্ছে না বলেই এখানে অভিযোগ করা হয়েছে। ফলে সেই ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে হলে পুজোর আগেই করতে হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় পুজোর অনুদান ঘোষণা করার পরই আদালতে নতুন করে মামলা হয়। আগের বছর গুলোতে বহু ক্লাব কোনও হিসেব দেয়নি বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য হলফনামা দিয়ে জানাবে ক্লাবগুলি হিসেবে দিয়েছে কি না। যদি না দিয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।