রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সম্পর্কে মন্তব্য করতে পারেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সেই মন্তব্য মানহানিকর হলে চলবে না। এমনই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। পরে তৃণমূলের দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রেয়াত হোসেন সরকার এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষকেও ওই মামলায় যুক্ত করা হয় রাজ্যপালের তরফে। সেই মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চ নির্দেশ দেয় মুখ্যমন্ত্রী ও অন্য তিনজন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও মানহানিকর বা ভুল মন্তব্য করতে পারবেন না।
১৬ জুলাই বিচারপতি কৃষ্ণ রাওয়ের সিঙ্গল বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, ১৪ অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যপালের মানহানি হয়, এমন কোনও মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই অন্তর্বর্তিকালীন নির্দেশ চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে যান মুখ্যমন্ত্রী ও কুণাল ঘোষ। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের তরফে দাবি করা হয়, কোনও প্রমাণ ছাড়াই অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ।
ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুক্রবারও শুনানি ছিল। মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, 'একজন ব্যক্তির খ্যাতি তাঁর কাছে পবিত্র এবং আইন তাকে এটি রক্ষা করার ক্ষমতা দেয়। অন্যদিকে, বাক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ভারতের প্রতিটি নাগরিককে প্রদান করা হয়, যা ঠেকানো যায় না। এই স্বাধীনতা অবশ্য যুক্তিসঙ্গত বিধিনিষেধ সাপেক্ষে। জনসাধারণের প্রতিটি সদস্যের সত্য জানার অধিকার রয়েছে এবং প্রত্যেকেরই সত্য প্রকাশ করার অধিকার রয়েছে। এটা অবশ্য ন্যায্যতার পরীক্ষা দাঁড় করা উচিত।'
শুনানি শেষে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের মানহানি হয়েছিল কি না, তা বিবেচনা করবে কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চই। নতুন করে এ ব্যাপারে হলফনামা জমা নিতে হবে।