প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াই খারিজ করে দেওয়া হতে পারে, এমন বার্তা দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ওএমআর শিটের তথ্য না পেলে ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেওয়া হবে, এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। সিবিআই-কে ওএমআর শিটের আসল তথ্য খুঁজতে হবে, নচেৎ ২০১৪ সালের টেট বাতিল করে দেওয়া হবে বলে সতর্ক করলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা জানিয়েছেন, ডিজিটাল তথ্য মুছে ফেলা হলেও সেটা ফেরত পাওয়া যায়। পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহে যাওয়ার পরও ডিজিটাল তথ্য পাওয়া যাবে। তাই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে যাবতীয় তথ্য খুঁজে বের করতে হবে। সিবিআই যদি সেই তথ্য খুঁজে বের করতে না পারে, তাহলে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেটের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দিতে বাধ্য হবে বলে জানিয়েছেন বিচারপতি মান্থা। অর্থাৎ বাতিল হয়ে যাবে প্রায় ৫৯,৫০০ চাকরি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষা দিয়েছিলেন কয়েক লক্ষ পরীক্ষার্থী। তার মধ্যে চাকরি পেয়েছিলেন প্রায় ৬০ হাজার। এই ২০১৪ সালের টেটেই কারচুপির অভিযোগে মামলা করা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। রাহুল চক্রবর্তী-সহ কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী আদালতে অভিযোগ করেছিলেন, ২০১৪ সালের টেটের পরে ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বেআইনি ভাবে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে। মঙ্গলবার সেই মামলারই শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার বেঞ্চে। মামলাকারীদের তরফে হাজির ছিলেন আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত এবং দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায়। তাঁরাই ওএমআর শিটের আসল তথ্য না পাওয়ার বিষয়টি জানান বিচারপতিকে। যা শোনার পরই টেট মামলার তদন্ত নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি মান্থা। পাশাপাশি প্রয়োজনে আবারও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে গিয়ে সিবিআই তল্লাশি চালাতে পারে, মঙ্গলবার এই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার হাইকোর্টে মামলার শুনানিতেই চাকরিপ্রার্থীদের আইনজীবীরা জানান যে তাঁরা ওএমআরের আসল তথ্য হাতে পারেননি। এরপরেই উষ্মাপ্রকাশ করেন হাইকোর্টের বিচারপতি মান্থা। তিনি কড়া ভাষায় নির্দেশ দেন যে সিবিআইকে ওএমআর শিটের প্রকৃত তথ্য খুঁজে বের করতে হবে। ডিজিটাল ডেটা যদি কেউ বা কারা মুছে ফেলেন, তাহলেও সেই ডেটা ফিরিয়ে আনার সুযোগ আছে। আর ওএমআর শিটের ওএমআর শিটের প্রকৃত তথ্য খুঁজে বের করার জন্য সিবিআইকে প্রয়োজনে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে যাওয়ারও ছাড়পত্র দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা, যাতে ‘ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট’ খুঁজে আনতে পারে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।