বাংলাদেশে 'পুশ ব্যাক' করা ৬ জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে ভারতে ফেরত আনতে হবে। নির্দেশ কলকাতা হাই কোর্টের। শুক্রবার বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রত মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। তাতে বলা হয়, গর্ভবতী সোনালি বিবি সহ ৬ জনকে অবিলম্বে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কেন্দ্র সরকার ৪ সপ্তাহের সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন করলেও তা খারিজ করে দেয় আদালত।
ঘটনার সূত্রপাত চলতি বছরের জুনে। অভিযোগ, দিল্লি পুলিশ সোনালি বিবি, তাঁর স্বামী দানিশ এবং আট বছরের ছেলেকে আটক করে। পরে তাঁদের বাংলাদেশে 'Push Back' করা হয়। সেই সময় সোনালি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। এর পর বাংলাদেশের পুলিশ তাঁদের অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেফতার করে জেলে পাঠিয়ে দেয়।
গোটা বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন সোনালির বাবা ভদু শেখ। তিনি জানান, মেয়ের সঙ্গে জুন থেকে কোনওভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি। এমনকি বীরভূমের পাইকার থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করেছিলেন।
এর আগের শুনানিতেই হাই কোর্ট মন্তব্য করেছিল, পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দাদের এ ভাবে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া 'জীবন ও স্বাধীনতার অধিকারে'র পরিপন্থী। এই নিয়ে কেন্দ্রকে বিস্তারিত হলফনামা দিতে বলা হয়েছিল। যদিও ওই হলফনামায় কোথা থেকে আটক করা ব্যক্তিদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, তা স্পষ্ট করে জানানো হয়নি।
শুক্রবার বিচারপতি চক্রবর্তী এবং মিত্রের বেঞ্চ জানায়, দেশ থেকে মানুষকে এ ভাবে বহিষ্কার করার ঘটনা সত্যিই গুরুতর। তাই এই মামলা খারিজ করা যাবে না।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টও সোনালি বিবির মামলা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে শুনানির নির্দেশ দিয়েছিল। সেই অনুযায়ী শুক্রবার কলকাতা হাই কোর্ট দ্রুত এই মামলার শুনানি করে। তাতে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, ওই ৬ জনকে চার সপ্তাহের মধ্যে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
উল্লেখ্য, এই ঘটনার পর, পশ্চিমবঙ্গ মাইগ্রান্ট ওয়েলফেয়ার বোর্ডের চেয়ারম্যান সমীরুল ইসলাম ওই পরিবারের পাশে দাঁড়ান। তাঁর সহায়তাতেই আদালত পর্যন্ত পৌঁছান সোনালি বিবির পরিবার। গত কয়েক মাসে ওড়িশা, দিল্লি ও হরিয়ানায়তেও একইভাবে বাংলাদেশি সন্দেহে অনেকে আটক হয়েছেন বলে খবর। অভিযোগ, তাঁদের মধ্যে অনেককেই বাংলাদেশে পুশ ব্যাকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।