রাসের সময় দক্ষিণ দিনাজপুরের বিখ্যাত বোল্লা কালীর পুজোয় ১০ হাজার পাঁঠাবলি এবারও হবে। পাঁঠা বলির ওপর হস্তক্ষেপ করল না কলকাতা হাইকোর্ট। সূত্রের খবর, শুক্রবার প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, এই সব উৎসবের অন্য ধরনের মেজাজ থাকে। এর সঙ্গে জড়িত অনেকের বিশ্বাস। অনেক রাজ্যে মোরগ লড়াই হয়। জাল্লিকাট্টুর মতো খেলা আদালত বন্ধ করে দেয়নি। তাই পাঁঠা বলির ওপরও কোনও হস্তক্ষেপ করল না আদালত।
দক্ষিণ দিনাজপুরে রাস পূর্ণিমার পর বোল্লা গ্রামে শুরু হয় বোল্লা কালী পুজো। সেই পুজোয় ১০ হাজার পাঁঠাবলি হয়। এই পাঁঠাবলি নিষিদ্ধ করার আবেদন জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিল একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। মামলাকারীর আইনজীবী জানান, লাইসেন্স ছাড়া যেখানে সেখানে পশুবলি হতে পারে না। রাজ্যের উচিত এটা বন্ধ করা। পশুদের উপর হিংসা বন্ধ করা উচিত। কিন্তু আদালত পাঠা বলি নিয়ে কোনও হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট।
জগদ্ধাত্রী পুজোর পরেই মায়ের আগমন হয় ভিন্ন রূপে। প্রতিবছরের মত রাসপূর্ণিমার পরের শুক্রবার পূজিত হন মা বোল্লা কালী রূপে। রাসপূর্ণিমার পরের শুক্রবার অর্থাৎ উত্তরবঙ্গের প্রাচীন ও বিখ্যাত বোল্লা রক্ষাকালীর পুজো। পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাটের এই পুজোকে ঘিরে উদ্দীপনা থাকে চরমে। এই কালী পুজোকে ঘিরে নজরকাড়া মেলা বসে।
জানা গেছে, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের সময় বর্ধমানের জমিদার হরিমোহন গাঙ্গুলী বোল্লা গ্রামসহ এই তল্লাটের মালিকানা পান, সেই সময় মহা ধুমধামে কালীপুজো শুরু হয়। এই জমিদারের দুই নায়েব, ভ্রাতৃদ্বয় রামসিংহ ও চিত্তগোবিন্দ চৌধুরী পরে জমিদার হন, তারা পুজোর দায়িত্ব নেন। সেই সময় জ্যৈষ্ঠমাসের ফলহারিণী অমাবস্যায় বার্ষিক কালীপুজো হত। এর পরবর্তীতে রাসপূর্ণিমার পরের শুক্রবার বার্ষিক পুজোর প্রথা শুরু হয়।
এই মামলার রায় দিতে গিয়ে জাল্লিকাট্টু নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রসঙ্গও টেনেছে বেঞ্চ। চলতি বছর তামিলনাড়ুতে ষাঁড়ের খেলা জাল্লিকাট্টুকে বৈধতা দিয়েছে সু্প্রিম কোর্ট। এই নিয়ে তামিলনাড়ু সরকার যে আইন এনেছিল, তাকে বৈধতা দিয়েছে। কেএম জোসেফের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, জাল্লিকাট্টুর সঙ্গে নৃশংসতার কোনও যোগ নেই।