'রায় মানতে পারছি না, তিন মাসে নিয়োগ শুরু' চাকরি বাতিলে মন্তব্য মমতারসুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হয়েছে। ২৫ হাজার ৭৫৩ জন শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হবে। কারণ ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল করেছে শীর্ষ আদালত। এনিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়া জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বিচারব্যবস্থার প্রতি সম্মান রয়েছে। কিন্তু এই রায় মানতে পারছি না। শীর্ষ আদালতের রায় মেনে তিন মাসে নতুন নিয়োগ শেষ করার কথাও জানিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ সম্মান রয়েছে। আমিও জীবনে আইনজীবী হিসেবে লড়াই করেছি। কিন্তু নাগরিক হিসেবে আমি এই রায় মেনে নিতে পারছি না। আমি বিচারপতিকে সম্মান জানিয়েই বলছি। আমি মানবিক ভাবে এটা বলছি। কেউ মিস ইনফর্ম করবেন না।'
সুপ্রিম রায়ে প্রায় ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হওয়ার পরই বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন রায় ঘোষণার পরই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে নবান্নে তলব করেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর সাংবাদিক বৈঠকে বসেন তিনি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কপি পড়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান যে যারা চাকরি করছেন তাঁদের কোনও টাকা ফেরত দিতে হবে না। তিনি বলেন, 'বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ সম্মান রয়েছে। কোনও বিচারপতির বিরুদ্ধে আমাদের কোনও অভিযোগ নেই। যারা ইতিমধ্যে চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের টাকা দিতে হবে না। আত্মরক্ষার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। এতগুলো শিক্ষকের ভবিষ্যৎ ভুলে গেলে চলবে না। শিক্ষা ব্যবস্থাকে বিপর্যয় আনা কি বিজেপি সরকারের টার্গেট? বাংলাকে আর কত টার্গেট করবে। মধ্য়প্রদেশে ব্যপম কেসে কী হয়েছে? কতজনের শাস্তি হয়েছে? আমাদের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে তো জেলে রেখেছেন। একজনের অপরাধে কতজনের শাস্তি হয়।'
আদালতের নির্দেশ মতো তিনমাসের মধ্যে নিয়োগ হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আদালত বলেছে তিন মাসের মধ্যে প্রসেস করতে, আমরা তা করে দেব। শিক্ষামন্ত্রীকে ইতিমধ্যে বলেছি, এসএসসিকে আমাদের ভাবনা জানাতে। এসএসসি অটোনোমাস সংস্থা। আমরা ওদের কাজে নাক গলায় না। ওরা যেমন ভাল বুঝবে, নিজেদের মতো করে করবে। তবে আমরা চাই এটা তাড়াতাড়ি হয়ে যাক।'
চাকরি বাতিল মামলার শুনানিতে এদিনই চূড়ান্ত রায়দান করলেন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ। এই মামলার রায়ের উপর প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীর ভবিষ্যত নির্ভর করছিল। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চ জানিয়ে দিল, পুরো প্যানেল বাতিল করা হল। অর্থাৎ কলকাতা হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছিল তাই বহাল রাখল সর্বোচ্চ আদালত। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এই মামলার শুনানি শেষ করে রায় স্থগিত রেখেছিল শীর্ষ আদালত।