দুর্গাপুজোর মুখে ফের রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ল দামোদর জলবন্দি বিতর্কে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, উৎসবের ঠিক আগে বাংলাকে জলমগ্ন করতে চাইছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি)। কিন্তু তাঁর দাবি ঘিরেই শুক্রবার রাত থেকেই তোলপাড় রাজনীতি। পাল্টা আসরে নামলেন কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রী সিআর পাতিল জানান, মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য “ভুল ও বিভ্রান্তিকর”।
শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, “মাইথন, পাঞ্চেত-সহ একাধিক জলাধার থেকে দেড় লক্ষ কিউসেকেরও বেশি জল ছেড়েছে ডিভিসি। রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে এই সিদ্ধান্তে বাংলার জনজীবন বিপর্যয়ের মুখে।” সেই অভিযোগ ঘিরেই শুরু হয় কেন্দ্র-রাজ্য তরজা।
পরের দিনই পাল্টা তথ্য তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সিআর পাটিল। তিনি জানান, দামোদর ভ্যালি রিভার রেগুলেশন কমিটির কাছ থেকে প্রাপ্ত হিসেব অনুযায়ী, শুক্রবার সন্ধ্যায় মোটে ৭০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। মাইথন থেকে ৪২ হাজার, পাঞ্চেত থেকে ২৭ হাজার কিউসেক। তাঁর কথায়, “ডিভিসির সব জলাধার থেকে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত হয় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে। মুখ্যমন্ত্রীর টুইটে যে দেড় লক্ষ কিউসেকের কথা বলা হয়েছে, তার কোনও ভিত্তি নেই।”
মমতার অভিযোগ ছিল আরও বিস্তৃত। তিনি লিখেছিলেন, “পুজো-পার্বণের সময়ে ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।” কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পাল্টা যুক্তি, বাস্তবে পরিস্থিতি মোটেই এমন নয়। তাঁর দাবি, বাংলার নিম্ন দামোদর সংলগ্ন অঞ্চল ও হুগলি এলাকায় জলস্তর সম্পূর্ণ স্বাভাবিক।
রাজনৈতিক মহল বলছে, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই জল-বিতর্ক আসলে রাজ্য কেন্দ্র দ্বন্দ্বের নতুন অধ্যায়। একদিকে মুখ্যমন্ত্রীর “অবিচারের অভিযোগ”, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর “তথ্যনির্ভর প্রতিবাদ”, ফলে, দুর্ভোগের আশঙ্কা যাই হোক না কেন, পুজোর মরসুমে বাংলার রাজনীতি এখন উত্তপ্ত।