আরজি কর হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হল কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে। মঙ্গলবার আরজি কর কাণ্ডের শুনানি ছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় জানান, এবার থেকে আরজি করের নিরাপত্তার দায়িত্ব সামলাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। তিনি বলেন, 'আমরা আরজি কর হাসপাতালে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করছি।'
বেশ কয়েকদিন আগে আরজি করে তাণ্ডব চালায় একদল দুষ্কৃতী। হাসপাতালের ভিতর ভাঙচুর চালানো হয়। লাখ লাখ টাকার ওষুধ লুট করা হয় বলে অভিযোগ। তারপর থেকেই নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ করছেন চিকিৎসক নার্সরা। পর্যাপ্ত নিরাপত্তার দাবি জানান তাঁরা। সেই ডাক্তারদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
দেশের শীর্ষ আদালতের তরফে জানানো হয়, হাসপাতালে CRPF ও CISF মোতায়েন করা হবে। হাসপাতালের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য এই পদক্ষেপ। আরজি কর-এ রামলার পর থেকে অনেক ডাক্তার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। অনেকে চলেও গিয়েছেন। এই তথ্য দেওয়া হয় সুপ্রিম কোর্টে। তারপরই আদালত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেয়। বিচারপতি জানান, চিকিৎসা করার জন্য ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তাঁরা যাতে কাজে ফিরতে পারেন সেই ব্যবস্থা করতে হবে। মেডিক্যাল কলেজে শুধুমাত্ লেখাপড়া হবে এমনটা নয়, তাঁদের প্র্যাকটিস চালিয়ে যাওয়ার জন্য নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন।
সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট আরও জানিয়েছে, এরপরও ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনও আশঙ্কা থাকলে রেজিস্ট্রারকে ইমেইল মারফত তা জানানো যাবে।
প্রসঙ্গত, আর জি মামলার শুনানিতে এদিন সুপ্রিম কোর্টে একের পর এক প্রশ্নবানে বিদ্ধ হতে হয় রাজ্য় সরকারকে। ঘটনার এফআইআর এত দেরিতে হল কেন, কেন নির্যাতিতার বাবা-মা-কে দেহ দেরিতে দেখতে হল? কেন প্রথমে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলার চেষ্টা করা হয়েছিল? কেন আরজি করের ভিতরে দুষ্কৃতীরা ঢুকল, পুলিশ কী করছিল? তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে কেন দেরিতে ডাকা হল, তিনি কেনই বা নিষ্ক্রিয়তা দেখালেন? এইসব প্রশ্ন রাজ্য সরকারকে করে শীর্ষ আদালত।
আর জি কর কাণ্ডে কলকাতার জায়গায় জায়গায় মিছিল হচ্ছে। সল্টলেকে মিছিল-জমায়েত করেছিল কলকাতার তিন প্রধান ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহামেডান ক্লাব। সেখানে পুলিশের বিরুদ্ধে বলপ্রয়োগের অভিযোগ ওঠে। তবে সুপ্রিম কোর্ট সাফ জানিয়ে দেয়, কোনও শান্তিপূর্ণ মিছিল বা জমায়েতে বলপ্রয়োগ করা যাবে না। সুপ্রিম কোর্ট জানায়, চিকিৎসক হোক কিংবা সুশীল সমাজ, কারও উপরই রাজ্যের ক্ষমতা চাপানো যেন না হয়।