দলে তিরস্কৃত হলেন সিপিআইএম-এর যুবনেতা শতরূপ ঘোষ। যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বিজেপিপন্থী দুই অভিনেতার সঙ্গে তাঁর ছবি সমাজমাধ্যমে দেখা গিয়েছিল। তাঁরা হলেন রূপা ভট্টাচার্য এবং অনিন্দ্যপুলক বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
সমর্থকদের মনে ক্ষোভ
সিপিআইএমকে সরাসরি সমর্থন করেন বা সিপিআইএমপন্থী বুদ্ধিজীবীদের একাংশ এ ব্যাপারে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র, অভিনেতা রাহুল বন্দ্যোপাধ্যায়। নিজেদের ফেসবুক পোস্টে তারা ওই ঘটনার সমালোচনা করেন। যদিও এখন আবার ওই দুই অভিনেতা-অভিনেত্রীর সঙ্গে বিজেপি দূরত্ব তৈরি হয়েছে বলে খবর।
যাদবপুরে কেন!
যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনের অনুষ্ঠানে শতরূপ কেন গেলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সিপিআইএম সূত্রে খবর, তাঁকে সেখানে বিশেষ দেখা যায়নি। আর সেদিন বিজেপি ঘনিষ্ঠ দুই তারকাকে নিয়ে তিনি হাজির।
শতরূপকে তিরস্কার
সিপিআইএম সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার তাঁকে দলের রাজ্য নেতারা ডেকে তিরস্কার করেন। তাঁর কাছ থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে, ওই বিজেপিপন্থী তারকাদের আনার অনুমতি তাঁকে কে দিয়েছে? তাঁকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, পতাকা ধরিয়ে দল বদলানো পার্টি আমাদের নয়। ওসব করতে হলে বেরিয়ে যান। এখানে ব্যক্তি হিসেবে নেতা হওয়ার চেষ্টা করবেন না।
কী হয়েছিল?
২০২০ সালের লকডাউনের সময় থেকে যাদবপুর-সহ আরও কয়েক জায়গায় ক্যান্টিন চালাচ্ছে সিপিআইএম বা বাম সমর্থকেরা। সেখানে কম খরচে নিম্নবিত্ত মানুষকে খাবার দেওয়া হয়। বিধানসভা ভোট পর্যদুস্ত হওয়ার পরও সেই কাজ তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
দিন কয়েক আগে, ১৬ অগাস্ট সেই যাদবপুর শ্রমজীবী ক্যান্টিনের ৫০০ দিন পূর্তি হয়েছে। আর সেই উপলক্ষে মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বিজেপির রূপা ভট্টাচার্য এবং অনিন্দ্যপুলক বন্দ্যোপাধ্যায় অংশ নিয়েছিলেন। তাঁরা মিছিলে হেঁটেছিলেন। পরে তাঁদের সঙ্গে শতরূপ ঘোষের ছবি দেখা যায়। আর তারপরই বিতর্কের সূত্রপাত।
শ্রীলেখা-রাহুলের তোপ
ওই ঘটনা নিয়ে শ্রীলেখা ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, নিজেকে কমিউনিস্ট বলার মতো স্পর্ধা আমার নেই। তবে আজীবন বাম আদর্শ মেনে চলে এসেছি। আপনার কী মনে হয় না আমাকে অন্য শাসকদল কিছু বলেনি? তা যদি মেনে নিতাম জীবনটা অনেক সোজা হত। ওই ঘটনায় তিনি আহত হয়েছেন, লিখেছিলেন সে কথাও।
রাহুল লিখেছিলেন, আমি কোনও প্রলোভন বা পাওয়ারের কারণে রাজনীতি করি না। আমার রাজনীতি একান্তই আদর্শগত। সিপিএমের মঞ্চে যদি টিকিট না পাওয়া হতাশ বিজেপি জায়গা পায়, তা হলে আমি আজ থেকে এই মুহুর্ত থেকে সিপিএমের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলাম।
এদিকে, বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছেন রূপা। ফেসবুকে তিনি পোস্ট করেছেন।