রবিবার মধ্যরাতে সুন্দরবনে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় রিমাল (Cyclone Remal)। ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে প্রতি ঘণ্টায় ১৩৫ কিলোমিটার। দফায় দফায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতাও জারি হয়েছে। ফলে ত্রস্ত বাংলা। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে সতর্কতা জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। তবে পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়় এই প্রথম নয়। আম্ফান, ইয়াশের মতো ঝড়ের সাক্ষী থেকেছে বাংলা। তার মধ্যে সবথেকে ভয়ঙ্কর ঝড় হয়েছিল ১৭৩৭ সালে। যার নাম 'The Great Bengal Cyclone of 1737'।
দি গ্রেট বেঙ্গল সাইক্লোনের প্রভাবে শুধু কলকাতাতেই প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ৩ হাজার মানুষ। বঙ্গোপসাগরের অনেক জাহাজ ডুবে গিয়েছিল। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে অসংখ্য গবাদি পশু ও বন্য প্রাণী মারা পড়েছিল। ১৭৩৭ সালের ১১ অক্টোবর আচমকা সেই ঝড় আছড়ে পড়েছিল গভীর রাতে। কোনওকিছু বুঝে ওঠার আগেই বহু মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল।
বিভিন্ন তথ্য় থেকে জানা যায়, শুধু ঝড় নয় সেসময়ে ভূমিকম্পেও কেঁপে উঠেছিল বাংলা। 'গ্রেট বেঙ্গল সাইক্লোন'-এর প্রভাবে ভারত মহাসাগরে সুনামিও এসেছিল বলে শোনা যায়। সব মিলিয়ে প্রায় ৩ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিলেন। আচমকা অভিঘাত সামলে উঠতে পারেনি শহর কলকাতাও। কার্যত লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল তিলোত্তমা।
গবেষকদের মতে, সেবার টানা ছ ঘণ্টা ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছিল। ওই টুকু সময়ের মধ্য়ে প্রায় ৩৮১ মিমি বৃষ্টিপাতের সাক্ষী থেকেছিল বাংলা। এক ব্রিটিশ গবেষক তখন জানিয়েছিলেন, কলকাতায় ৩ হাজার মানুষের মৃত্যু তো হয়েছিল, আর সবমিলিয়ে সংখ্যাটা ছিল প্রায় ৩ লাখ। বন্দরে প্রায় ২০ হাজার জাহাজ ধ্বংস হয়।
গবেষকরা জানিয়েছিলেন, এই ঝড়ের সময় ৩০ থেকে ৪০ ফুটের ঢেউ উঠেছিল গঙ্গায়৷ আজকের দিনে প্রায় ৪ তলা বাড়ির সমান জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল গঙ্গায়। দেশের ইতিহাসে এই ঝড়কেই সবথেকে বড় ঝড় বলা হয়ে থাকে।