একে ডেঙ্গি রক্ষা নেই, ম্যালেরিয়া দোসর। কলকাতায় ফের চোখরাঙাচ্ছে ডেঙ্গি। কলকাতা ও সংলগ্ন শহরতলিতে গত বছর ২৫ জুলাই পর্যন্ত ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬২৬। এ বার ম্যালেরিয়ার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে ১২৯০ জনের! যা দেখে কপালে চিন্তার ভাঁজ স্বাস্থ্যকর্তাদের। অন্যান্য বছর উত্তর কলকাতাতেই মূলত ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বেশি থাকে। এ বার দক্ষিণ এবং ইএম বাইপাস লাগোয়া এলাকা থেকেও আক্রান্ত হওয়ার খবর আসছে।
শহরের বিভিন্ন জায়গায় যেখানে বড় পরিসরে বৃষ্টির জল জমে বা জমার সম্ভাবনা থাকে, সেই সব জায়গায় ঠিকমতো নজরদারি না হওয়ার ফলেই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক বলে অভিযোগ। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে খবর, ম্যালেরিয়ার মশা মূলত রাত ১০টা থেকে ভোর ৪টে পর্যন্ত কামড়ায়। কিন্তু মশারি টাঙানোর প্রবণতা কম থাকায় সমস্যা বাড়ছে। তবে ম্যালেরিয়ার মৃত্যুর হার কিছুটা কম হলেও শরীরে জটিলতা থাকলে পরিস্থিতি মারাত্মক হতে পারে।
অন্যদিকে, এই বর্ষা মরসুমে ডেঙ্গির বিস্তার রোধ করার জন্য, কলকাতা পুরসভা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এবং বিমানবন্দরের সমস্ত ইমিগ্রেশন পয়েন্টে রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পদক্ষেপের লক্ষ্য বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশকারী ডেঙ্গুর রোগী এবং বাহকদের শনাক্ত করা যেখানে ডেঙ্গু আশঙ্কাজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।
কলকাতা ও আশেপাশের এলাকায় ডেঙ্গু সংক্রমণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কলকাতার মেয়র এবং রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বুধবার ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং অন্যান্য ভেক্টর-বাহিত রোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি এবং উপায়গুলি তদারকি করতে সমস্ত স্টেকহোল্ডারদের সাথে একটি বৈঠক করেছেন।
ওইদিনই রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরও সমস্ত জেলার আধিকারিকদের সাথে একই বিষয়ে একটি বৈঠক করেছে বলে খবর৷ কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “প্রতিবেশী দেশ, বিশেষ করে ঢাকায় ডেঙ্গি আশঙ্কাজনকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে৷ বিষয়টি নিয়ে আমি ঢাকায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগকে চিঠি দেব যাতে কেন্দ্রকে অবিলম্বে সমস্ত ইমিগ্রেশন পয়েন্টে রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করতে বলা হয়।”
তিনি আরও বলেন,“আমাদের কর্মীরা সচেতনতা ছড়াতে এবং মশার প্রজনন ক্ষেত্র যাতে না থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য ডোর টু ডোর ভিজিট করছে। আমরা কলকাতার সমস্ত ১৬টি বরোতে রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্রও স্থাপন করেছি, যা ২৪ ঘন্টার মধ্যে ফলাফল দেবে।"