শমীক ভট্টাচার্য স্বীকার করেছেন দলের সঙ্গে ক্ষণিকের ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল দিলীপ ঘোষের। তবে তিনি বাইরের লোক এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। এমনকী আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ এক নতুন এবং সঙ্ঘবদ্ধ BJP-কে পেতে চলেছে, এ ইঙ্গিতও দিয়েছেন। দলের নয়া রাজ্যসভাপতির সঙ্গে বৈঠক সেরে দিলীপ ঘোষকেও দেখা গিয়েছিল সেই চেনা ছন্দে। দলবদলের জল্পনায় তিনি জল ঢেলেছেন বলেই মনে করছিল রাজনৈতিক মহল। অথচ তাঁর দিল্লি যাত্রার পর ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে তাঁর মুখে শোনা গেল ইঙ্গিতবহ মন্তব্য। গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতা থেকে নীচু তলার কর্মী সকলেই যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আঙুল তোলেন, তখন দিলীপ ঘোষ বলছেন অন্য কথা। তাঁর মতে, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্নীতিতে দোষী সাব্যস্ত নন।'
চমকে দিলেন দিলীপ
বুধবার দিল্লিতে দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের দফতরে সস্ত্রীক পৌঁছে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। ঘণ্টাখানেক ছিলেন সেখানে। লের সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিব প্রকাশের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক সেরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্নীতিতে দোষী সাব্যস্ত নন। মমতার আশপাশে যাঁরা ছিলেন বা রয়েছেন, তাঁরা বরং দাগি।' তাঁর এই বয়ান চমকে দিয়েছে সকলকেই।
উল্লেখ্য,দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে হাজির হওয়ার পরে দলের একাংশের আক্রমণের মুখে পড়ে মমতা সম্পর্কে যে কথা বলেছিলেন, বুধবার রাতে তারই পুনরাবৃত্তি শোনা গেল দিলীপের মুখে। সাংবাদিকরা তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্লিনচিট দিয়েছেন কি না, জবাবে তিনি জানান, মমতার বিরুদ্ধে তো কোনও দুর্নীতির মামলা নেই। তাঁর বক্তব্য, 'আমাকে দেখেছেন কখনও কারও বিরুদ্ধে বাজে কথা বলতে? আমি প্রশংসা করবি সকলেরই। তাছাড়া আমি প্রশংসা করিনি, আমি বলেছি যাঁর বিরুদ্ধে এত কথা বলা হচ্ছে তাঁর নামে কোনও কোনও কেস নেই। যাঁর বলছেন, তাঁদের নামেই তো কত কেস রয়েছে। আর আমি কারও পাশে বসলেই চোর-ডাকাত প্রমাণিত হয়ে যাব?'
ফের জলঘোলা?
প্রসঙ্গত, গত প্রায় আড়াই মাস ধরে দিলীপ ঘোষ এবং BJP শিবিরের মধ্যে টানাপড়েন চলেছে। সদ্য নির্বাচিত রাজ্য সভাপতি শমীক ঘোষের সঙ্গে বৈঠকের পর সেই টানাপড়েনের অবসান হয়েছিল বলেই মনে করা হচ্ছে। মাঝে তাঁর দলবদলের জল্পনাও শুরু হয়েছিল। তবে শমীকের সঙ্গে বৈঠক সেরে বেরিয়ে দিলীপ ঘোষের বক্তব্যে জলঘোলা বন্ধ হয়েছিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। তবে ফের একবার দিলীপের মমতা সম্পর্কে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য নতুন করে চর্চার বিষয়বস্তু হয়ে উঠল। যদিও দলীয় স্তরে এই মর্মে এখনও কারও তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।