হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতারির ঘটনায় উত্তাল বাংলাদেশ। এই আবহেই কলকাতার পার্ক স্ট্রিট থেকে গ্রেফতার করা হল এক বাংলাদেশিকে। ধৃত ব্যক্তি প্রাক্তন বিএনপি কর্মী। তাঁর কাছ থেকে ভুয়ো পাসপোর্ট, আধার কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার মধ্যরাতে পার্ক স্ট্রিট এলাকায় একটি হোটেলে অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশ। সেই অভিযানেই দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয় ওই বাংলাদেশিকে। ধৃতের নাম সেলিম মাতব্বর।
সূত্রের দাবি, ভুয়ো পাসপোর্ট এবং আধার কার্ড নিয়ে গত ২ বছর ধরে ভারতে ছিলেন ওই ব্যক্তি। দেশের অন্য শহরে থাকার পর ৪ মাস আগে কলকাতায় আসেন ধৃত। শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হোটেলে তল্লাশি চালায় পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, সেলিম যে পাসপোর্ট এবং অন্য নথি বানিয়েছেন, তাতে রবি শর্মা বলে তাঁর নাম উল্লেখ করেছেন। রবি পরিচয় দিয়েই কলকাতায় থাকছিলেন তিনি। ধৃতের কাছ থেকে যে পাসপোর্ট উদ্ধার করা হয়েছে, তাতে রাজস্থানের একটি ঠিকানা উল্লেখ রয়েছে। পার্ক স্ট্রিট থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের মাদারিপুরের বাসিন্দা সেলিম। ৪ মাস আগে নয়ডা থেকে কলকাতায় আসেন তিনি। মধ্য কলকাতার মারকিউস স্ট্রিট এলাকার একটি হোটেলে কাজ করতেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত দাবি করেছেন যে, তিনি একসময় বিএনপি কর্মী ছিলেন। এক মিডলম্যানের হাত ধরে বাংলাদেশ থেকে কলকাতায় আসেন সেলিম।
প্রসঙ্গত, সোমবার ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে হিন্দু সন্ন্যাসীকে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার আবেদন না জানানোয় সন্ন্যাসীকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার হিন্দু সন্ন্যাসীর গ্রেফতারের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন সে দেশের হিন্দুদের একাংশ। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, 'বাংলাদেশ প্রশাসনের কাছে আর্জি জানাচ্ছি, যাতে হিন্দু-সহ সমস্ত সংখ্যালঘুর সুরক্ষা সুনিশ্চিত করা হয়।' হিন্দুদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতার কথাও উল্লেখ করেছে নয়াদিল্লি। হিন্দু সন্ন্যাসীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ইসকন। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপের আর্জি জানিয়েছে তারা।