কলকাতায় মেসি।-ফাইল ছবিঘুম-আরাম সবকিছুকে এক পাশে সরিয়ে রেখে গভীর রাতেই বিমানবন্দরের পথে পা বাড়িয়েছিলেন তাঁরা। লক্ষ্য একটাই, লিওনেল মেসির এক ঝলক দেখা। শনিবার ভোর আড়াইটে নাগাদ কলকাতায় পা রাখতেই শহরজুড়ে শুরু হয়ে যায় মেসি-উন্মাদনা। তিন দিনের ‘গোট ট্যুর ইন্ডিয়া’-র প্রথম স্টপ কলকাতা। এরপর হায়দরাবাদ, মুম্বই ও দিল্লি, চার শহরে ব্যস্ত সূচি আর্জেন্তিনীয় মহাতারকার।
শুক্রবার রাত থেকেই কলকাতার নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে জমতে শুরু করেন অনুরাগীরা। কারও হাতে আর্জেন্তিনার পতাকা, কারও গায়ে প্রিয় খেলোয়াড়ের জার্সি। কেউ আবার মোবাইল ক্যামেরা হাতে দাঁড়িয়ে, এক ফ্রেমে মেসিকে বন্দি করার আশায়। রাত গড়িয়ে ভোর, ভোর গড়িয়ে সকাল। তবু উন্মাদনায় একটুও ভাটা পড়েনি।
এই ভিড়ের মধ্যেই নজর কাড়ে এক তরুণীর হাতে ধরা প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা, ‘গত শুক্রবারই বিয়ে করেছি। কিন্তু মেসিকে দেখার জন্য হানিমুন বাতিল!’ মুহূর্তেই সেই ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। সংবাদসংস্থা এএনআই-কে ওই সমর্থক জানান, ২০১০ সাল থেকেই তিনি মেসির ভক্ত। হাসিমুখে বলেন, “২০১১ সালে মেসি কলকাতায় এসেছিলেন। তখন আমরা খুব ছোট ছিলাম, আসতে পারিনি। এবার আর ছাড়ার প্রশ্নই নেই।”
পাশেই দাঁড়িয়ে তাঁর স্বামী। স্ত্রীর কথায় সায় দিয়ে তিনিও জানান, হানিমুন পরে হবে, এখন শুধু মেসি। দু’জনের একটাই কথা, “এমন সুযোগ জীবনে বারবার আসে না।”
এই উন্মাদনা শুধু ওই নবদম্পতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বিমানবন্দর চত্বর জুড়ে একই আবেগ। রাতভর অপেক্ষায় থাকা এক অনুরাগী বলেন, “দু’ঘণ্টা ধরে দাঁড়িয়ে আছি। দরকার হলে চার ঘণ্টাও থাকব। একবার চোখে দেখলেই হল।” আর এক তরুণের মন্তব্য, “মেসি শুধু খেলোয়াড় নন, তিনি ফুটবলের জাদুকর, আসল GOAT।”
উল্লেখ্য, এটি লিওনেল মেসির দ্বিতীয় ভারত সফর। ২০১১ সালে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ভারতের মাটিতে ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে বন্ধুত্বপূর্ণ ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। সেই ম্যাচে ১-০ গোলে জয় পেয়েছিল আর্জেন্তিনা। দীর্ঘ ১৪ বছর পর আবার কলকাতায় পা রাখলেন মেসি, তাই উন্মাদনার পারদ স্বাভাবিকভাবেই চরমে।
যদিও কড়া নিরাপত্তার কারণে বিমানবন্দরে অপেক্ষারত অধিকাংশ সমর্থকই মেসিকে চোখে দেখার সুযোগ পাননি। ব্যাক এন্ট্রি দিয়ে দ্রুত তাঁকে হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়। তবু হতাশা নেই কলকাতার। কারণ শহরজুড়ে দিনভর একাধিক কর্মসূচি। যুবভারতী থেকে শুরু করে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেসির উপস্থিতির অপেক্ষায় এখন গোটা শহর।