মুর্শিদাবাদের ঔরঙ্গাবাদের বাসিন্দারা এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না খবরটা। কোন খবর? তারা যখন থেকে শুনেছেন তাদের আপদে-বিপদে পাশে দাঁড়ানো জাকিরের বাড়ি, কারখানা ও অফিস থেকে উদ্ধার হয়েছে ১১ কোটি টাকা। জাকির বলতে জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক ও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির হোসেনের (Jakir Hossain) কথা বলছি। তাঁর বাড়িতেই বুধবার সাত সকালে হানা দিয়েছিল আয়কর দফতর। বাড়ি-অফিস-গুদামে তল্লাশিতে উদ্ধার হয়েছে ১১ কোটি। এ নিয়ে আবার শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠেছে।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের কিছুদিন আগেই রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন জাকির হোসেন। তৃণমূলের টিকিটে জঙ্গিপুর থেকে লড়াই করে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছিলেন। জাকির হোসেনের বাড়ি মুর্শিদাবাদের সুতি থানার ঔরঙ্গয়াবাদে। যদিও জঙ্গিপুরে, বহরমপুর, কলকাতা, দিল্লিতে তাঁর বাড়ি ও অফিস রয়েছে বলে জানা যায়। জঙ্গিপুরে তাঁর যে বাড়ি রয়েছে, সেই বাড়ির নাম 'জনতার দরবার'। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা জাকির জীবনযুদ্ধে সত্যিই নায়ক। আর সেটা না বলার কোনও কারণ নেই। বিড়ির সাধারণ ঠিকাদার থেকে মুন্সিয়ানা দেখিয়েই তিনি আজ শিল্পপতির তকমা পেয়েছেন।
আরও পড়ুন:Best Momos Restaurant In Kolkata: মোমো যেখানে সেখানে কেন খাচ্ছেন? কলকাতার সেরা দোকানগুলির হদিশ রইল
ব্যবসার সঙ্গে প্রতিপত্তি বাড়তে শুরু করতেই জেলা ছাড়িয়ে পরিচিতি বাড়ে জাকিরের। ২০১৬ সালে তিনি রাজনীতিতে আসার প্রস্তাব পান বলে জানা যায়। এরপরেই তৃণমূলে যোগদান এবং ভোটে লড়া। রেকর্ড ভোটে জঙ্গিপুর বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে নজির গড়েছিলেন তিনি। এরপর রাজ্য মন্ত্রিসভায় তাঁকে জায়গা দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১ সালের নির্বাচনেও তিনি একই আসনে জয়ী হন। যদিও এবার আর তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি।
২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ধুলিয়ান স্টেশনে বিস্ফোরণে গুরুতর জখম হন জাকির। তাঁকে কলকাতায় এনে চিকিৎসা করানো হয়। জেলার রাজনীতিতে কান পাতলে শোনা যায় জাকির হোসেনের রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষের কথা। তিনিও আবার সুতির প্রভাবশালী বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস। সূত্রের খবর, জাকির নাকি তাঁর উপরে হামলার ঘটনায় এই ইমানির দিকেই ইঙ্গিত করেছিলেন। যদিও এসব নেহাতই গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছে রাজ্য শাসকদল।
ঔরঙ্গাবাদ, জঙ্গিপুরের মানুষদের কাছে আবার জাকির গরিবের মসিহা নামেও পরিচিত। কারণ তিনি প্রচুর দানধ্যান করেন। কোনও গরিব মানুষ তাঁর কাছে সমস্যা নিয়ে এসে খালি হাতে ফেরেন না। ধুলিয়ান স্টেশনে বিস্ফোরণে তাঁর সঙ্গে জখম হওয়া লোকজনের পরিবারের পাশেও দাঁড়িয়েছেন জাকির। আর তাই জাকিরের বাড়িতে আয়কর দফতরের হানা ও টাকা উদ্ধারে মুষড়ে পড়েছেন মানুষজন।