হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসআগামী শীতের আগেই বাংলায় চালু হবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেন (Vande Bharat Express Train)। আগামী ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় গঙ্গা পরিষদের বৈঠকে অংশ নিতে কলকাতায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Prime Minister Narendra Modi)। জানা গিয়েছে, ওইদিনই তিনি হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের (Howrah-NJP Vande Bharat Express) উদ্বোধন করতে পারেন। তবে এই বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি এখনও।
বন্দে ভারতের সম্ভাব্য সময়সূচি (Howrah-NJP Vande Bharat Express Tentative Schedule):
রেলের তরফে জানা গিয়েছে, সপ্তাহের ছয়দিনই এই ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি যাত্রাপথে মাত্র দুটি স্টেশনে দাঁড়াবে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। সেই দুটি স্টেশন হল বোলপুর (Bolpur) ও মালদা টাউন (Malda Town)। অর্থাৎ, কেউ শান্তিনিকেতন যেতে চাইলে কম সময়েই সেখানে পৌঁছে যাওয়া যাবে।
এখনও পর্যন্ত ঠিক হয়েছে, ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে হাওড়া থেকে ছাড়বে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। মাঝে মালদা টাউনে পৌঁছে যাচ্ছে ১০:৪৫ মিনিটে। আর সেখান থেকে ছেড়ে যাচ্ছে ১০:৫০ মিনিটে। এনজেপি স্টেশনে এটি পৌঁছে যাবে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে। ফিরতি পথে এনজেপি থেকে দুপুর ২টো ৫০ মিনিটে ছাড়বে ট্রেন। মাঝখানে মালদায় পৌঁছবে বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিটে। হাওড়ায় এসে পৌঁছবে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে। তবে এই সময়সূচি উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের কাছে পাঠানো হবে। সেখানে থেকে ও অন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র পেলেই সময়সূচি রেল বোর্ডের কাছে পাঠানো হবে।
ভাড়া কত হতে পারে?
বন্দে-ভারত এক্সপ্রেসের গতি যেমন বেশি, তেমন ভাড়াও অনেকটাই বেশি। দিল্লি ও বারাণসীর মধ্যে এই ট্রেনের চেয়ারকারের ভাড়া ১৭৯৫ টাকা। যা শতাব্দী এক্সপ্রেসের প্রায় দেড় গুণ। আর এক্সজিগিউটিভ ক্লাসের ভাড়া প্রায় ৩৫২০ টাকা। যা ওই যে কোনও প্রিমিয়াম ট্রেনের এসি কামরার ভাড়ার চেয় অনেকটা বেশি।
কীভাবে বুকিং?
বুকিং করতে পারবেন অনলাইনে, বন্দে ভারতের নিজস্ব ওয়েবসাইট, আইআরসিটিসি, রেলের কাউন্টারগুলি থেকেই।
খাবার কেমন মিলবে?
তবে এই ভাড়ার মধ্যে পাবেন উচ্চমানের খাবার বলে রেলের প্রতিশ্রুতি। রেলের দেওয়া হিসাব অনুসারে, এগজিকিউটিভ ক্লাসে সকালের চা, ব্রেকফাস্ট.ও লাঞ্চের জন্য ভাড়ার মধ্যে ধরা যাত্রীদের কাছ থেকে ধরা হয়েছে ৩৯৯ টাকা। চেয়ারকারের যাত্রীদের খাবারের জন্য খরচ হচ্ছে ৩৪৪ টাকা।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে?
এই ট্রেনটি বিশেষভাবে ডিজাইন করা আসন। এগুলি ১৮০ ডিগ্রি থেকে ৩৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘোরানো যেতে পারে এবং বিমানের আসনের মতো সুবিধাও মিলবে এই আসনগুলিতে। ভারতের ট্রেনে এই ধরনের আসন এই প্রথম। এই ট্রেনে কাভাচ প্রযুক্তি (Kavach technology)-সহ একাধিক উন্নত সুবিধা রয়েছে। কভচ প্রযুক্তির মাধ্যমে ট্রেনের সংঘর্ষ এড়ানো খুব সহজেই সম্ভব হবে।
গতি কত ও কত সময় লাগবে?
এই ট্রেনের কামরাগুলিতেও Suspended Traction Motors থাকবে। ফলে ১৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে এই ট্রেনটি যাত্রা করতে পারবে। এই প্রযুক্তির ফলে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি, তাঁরা আরামদায়কভাবেই যাত্রা করতে পারবেন। জানা গিয়েছে, সব শ্রেণিতেই হেলান দিয়ে বসার মতো আসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এক্সিকিউটিভ কোচগুলিতে ৩৬০ ডিগ্রি ঘোরানো যাবে, এমন আসন দেওয়া হয়েছে। এটি শতাব্দী এক্সপ্রেস থেকেও কম সময় লাগবে। আনুমানিক যাত্রার সময় ৬ ঘন্টা।
বিনোদনের ভরপুর বন্দোবস্ত
যাত্রীদের তথ্য দেওয়া ও বিনোদনের জন্য প্রতিটি কোচে ৩২ ইঞ্চির স্ক্রিন দেওয়া হয়েছে। যাতে দৃষ্টিহীনরা এই ট্রেনে কোনওরকম সমস্যায় না পড়েন, সেজন্য ব্রেইল অক্ষরে আসন নম্বরও লেখা হয়েছে। পাশাপাশি, বিশেষভাবে সক্ষমদের জন্য শৌচাগারেরও ব্যবস্থা রয়েছে এই ট্রেনে।