ফের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি। ভিক্টোরিয়ার ঘটনারই পুনরাবৃত্তি বলা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় সরকারের অনুষ্ঠান ‘বন্দে ভারত এক্সপ্রেস’ উদ্বোধনের মঞ্চে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখেই ‘জয় শ্রী রাম’ স্লোগান। যার জেরে মঞ্চে উঠলেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে তুমুল চাপানউতোর শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী শিবিরে। বিষয়টিতে রামকে অপমান করা হয়েছে বলে মনে করছেন ফিরহাদ হাকিম।
শুক্রবার বিজেপির ওই রাজনৈতিক স্লোগান নিয়ে কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ বলেন, রামকে অপমান করছে। মন্দিরে, বাড়িতে পরিচ্ছন্ন হয়ে রামের নাম নেওয়া উচিত। ইরিটেশন, রেষারেষি বা ছ্যাবলামি করার জন্য রামের নাম নেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল যদি মনে করে তাহলে স্লোগানে ভরিয়ে দিতে পারে, গলা টিপে দেবে। কিন্তু আমরা সৌজন্য দেখিয়েছি। বিজেপি সৌজন্যের যোগ্য নয়। অসভ্যতা যেটা মুখ্যমন্ত্রীর সামনে করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তো নিজেই একজন হিন্দু, পুজো করেন। এটা নিয়ে ছ্যাবলামো করছে। মুখ্যমন্ত্রীকে নয়, শ্রীরামকে অপমান করছে।
তবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, এটা নন্দীগ্রামে হারার যন্ত্রণা। এখনও হারের যন্ত্রণা ভুলছেন না। একই কাজ কলাইকুন্ডায় করেছিলেন। অত্যন্ত নিম্নরুচির রাজনীতিবীদ।
আরও পড়ুন-মমতা ঢুকতেই 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান, ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী
তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষও বিজেপির উদ্দেশে তোপ দেগেছেন। তাঁর বক্তব্য, শুভেন্দু কাল কা যোগী বিজেপিতে। রামনাম তো সবাই করে, রামকে মিসইউজ করছেন কেন। রামনামে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু রেলের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জয় শ্রীরাম কেন। ওটা বন্দে ভারত নয়, ধন্দে ভারত এক্সপ্রেস। একটা ট্রেন নিয়ে এতকিছু!
বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ওই স্লোগান প্রথম থেকেই শুরু হয়েছে। নরেন্দ্র মোদীকে পর্দায় দেখার পর থেকেই স্লোগান। এই স্লোগান তাঁদের রক্তে।
এদিন হাওড়া স্টেশনে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনের অনুষ্ঠান ছিল। মায়ের প্রয়াণে সশরীরে উপস্থিত থাকতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভার্চুয়ালি ছিলেন তিনি। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব।, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকরা। সকাল সাড়ে ১১টার কিছুটা আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুষ্ঠানে আসেন। ঘটনাচক্রে সেসময়ে দর্শক আসনে বসে থাকা একাংশ ‘জয় শ্রী রাম’ ধ্বনি দিতে থাকেন।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব স্লোগান দেওয়া জনতাকে থামানোর চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণের জন্য একটা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। রেলের আধিকারিকরা সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর দেখা যায়, রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব ও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস মুখ্যমন্ত্রীর দিকে এগিয়ে আসেন। তাঁর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন, তাঁকে কিছুটা বোঝানোর চেষ্টা করেন। দৃশ্যত তৈরি হওয়া অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তারপরও দেখা যায়, মঞ্চে ওঠেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-'ও আমার দেশের মাটি...' কবি স্মরণ করে বাংলার জন্য একগুচ্ছ ঘোষণা মোদীর