শরীরের বাইরে আঘাতের চিহ্ন নেই, আকণ্ঠ নেশায় ঝিলে পড়েন JU-র ছাত্রী? পোস্ট মর্টেমের অপেক্ষা

অত্যধিক মদ্যপান করেই বেসামাল হয়ে ঝিলে পড়ে যান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী? ঝিল থেকে দেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। সিসিটিভির দাবিতে ফের সরব তৃণমূল। ঠিক কী ঘটেছিল ক্যাম্পাসে?

Advertisement
শরীরের বাইরে আঘাতের চিহ্ন নেই, আকণ্ঠ নেশায় ঝিলে পড়েন JU-র ছাত্রী? পোস্ট মর্টেমের অপেক্ষাযাদবপুরে ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু
হাইলাইটস
  • নেশাগ্রস্ত অবস্থায় টলে পড়ে যান যাদবপুরের যাত্রী
  • ক্যাম্পাসেই চলছিল নেশার আসর?
  • ঘুমের ওষুধের তত্ত্বও উঠে আসছে

ফের সেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ফের পড়ুয়ার রহস্য মৃত্যু। ইউজি আর্টস বিল্ডিংয়ের উল্টোদিকে ঝিল থেকে ২১ বছর বয়সী ছাত্রীর দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসে। নেশার আসল বসেছিল ঝিলপাড়ে? মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান করেই কি ছাত্রী ঝিলে পড়ে যান?  নাকি তাঁর সঙ্গে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে? হাজারো প্রশ্ন ভিড় করে আসছে সাধারণ মানুষের মনে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূল নেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য। ক্যাম্পাসে সিসিটিভি লাগানো এবং স্থায়ী পুলিশ পোস্টিংয়ের দাবি না মানার জন্যই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে দাবি তাদের। তবে ঠিক কী ঘটনা ঘটেছিল বৃহস্পতিবার রাতে?

ক্যাম্পাসে মদের আসর?

জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেট থেকে ঢুকে যে পার্কিং লট রয়েছে, সেখানে 'রুহানিয়াত' নামে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিল। ওই ছাত্রী তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে সেই অনুষ্ঠান দেখছিলেন এবং ৪ নম্বর গেটের কাছেই ঝিলের পাড়ে বসেছিলেন। সূত্রের খবর, মদ্যপান করছিলেন বন্ধুরা সকলেই। গাঁজার আসরও বসেছিল বলে খবর। 

ঠিক কী ঘটেছিল?

মেয়েটির সহপাঠীদের থেকে জানা গিয়েছে, আসরের মাঝেই টয়লেটে যাওয়ার জন্য উঠেছিলেন তিনি। ৪ নম্বর গেটের কাছে ইউনিয়ন রুমের পাশের শৌচালয়ে গিয়েছিলেন। সে সময়েই পড়ে যান ঝিলে। সহপাঠীদের একাংশের দাবি, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পা টলে গিয়ে পড়ে গিয়েছিলেন। তবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের কারণে ৪ নম্বর গেট সংলগ্ন ওই অংশে আলো কম ছিল। ফলে তরুণী পড়ে যাওয়ার সময়ে কেউ সঠিক ভাবে দেখতে পায়নি। পাশাপাশি মাইক বাজায় তরুণীর চিৎকারের আওয়াজও কেউ শুনতে পায়নি। 

ময়নাতদন্তের অপেক্ষা

অন্যদিকে, ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন বলেও একটি অংশের তরফে দাবি করা হচ্ছে। যদিও জানা গিয়েছে, মেয়েটির পোশাক অবিন্যস্ত ছিল। তাঁর শরীরের বাইরে কোনও আঘাতের চিহ্নও মেলেনি। রাত ১০টা ২০ নাগাদ পুকুরে তাঁকে ভাসতে দেখেন বন্ধুবান্ধবরা। ঝিল থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করেন সহপাঠীদেরই কয়েক জন। দ্রুত কেপিসি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়েও যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, শুক্রবার কাটাপুকুর মর্গে তাঁর ময়নাতদন্ত হবে। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে পুলিশ প্রাথমিক ভাবে তদন্ত শুরু করেছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মদ্যপান কিংবা ঘুমের ওষুধের বিষয়টি স্পষ্ট হবে না বলে জানানো হয়েছে। 

Advertisement

তরুণীর এই রহস্যমৃত্যু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো ক্ষত উস্কে দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। রাতে ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীরা কীভাবে মদের আসর বসায়, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে আবার। যদিও ছাত্রছাত্রীদের একাংশের দাবি, ড্রামা ফেস্টিভ্যাল চলার কারণে রাত পর্যন্ত তারা ক্যাম্পাসে ছিলেন। আপাতত চার নম্বর গেটের সামনের তিনটি সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। একটি রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ নম্বর গেট দিয়ে ঢুকেই বাঁ দিকে কলা বিভাগের বিল্ডিংয়ে। সেখানে ইংরেজি বিভাগও রয়েছে। সেখানেই পড়তেন এই ছাত্রী। এছাড়া সিকিউরিটি রুমের কাছে একটি সিসি ক্যামেরা রয়েছে এবং কলা বিভাগের দিকে রয়েছে আরও একটি। সেগুলিই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি এদিন ফরেন্সিক টিমেরও যাওয়ার কথা ঘটনাস্থলে। ঝিলের পাড়, শৌচালয় সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করবে তারা। 

 

POST A COMMENT
Advertisement