বৃহস্পতিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলের বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হল ১৮ বছরের এক ছাত্রের। তাঁর নাম স্বপ্নদীপ কুণ্ডু। তিনি ঝাঁপ দিয়েছিলেন নাকি এর পেছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, তা নিয়েই ক্রমশ রহস্য দানা বাঁধছে। মৃত্যুর আগেরদিন রাতে স্বপ্নদীপ বাড়িতে ফোন করে ভয় পাচ্ছেন বলে জানিয়েছিলেন। পরিবারের তরফে জানা গিয়েছে, গত এক সপ্তাহ আগে বগুলা কলেজপাড়ার বাসিন্দা স্বপ্নদ্বীপ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। বৃহস্পতিবার স্বপ্নদীপের মামা অরূপ কুণ্ডু দাবি করেছেন যে গতকাল রাতে মাকে ফোন করে ভয় পাওয়ার কথা জানান স্বপ্নদীপ।
অরূপের কথায়, 'ও বলে মা আমি ভাল নেই, খুব ভয় লাগছে। তুমি শীঘ্রই এসো, তোমার সঙ্গে অনেক কথা রয়েছে। ওর মা বলে, ঠিক আছে ভয় পাবি না। আমরা কাল সকালে যাচ্ছি।' এরপর রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ বাড়িতে ফোন আসে যে ছাদ থেকে পড়ে স্বপ্নদীপের মৃত্যু হয়েছে।
স্বপ্নদীপের বাবা কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কে চাকরি করেন। মা আশা কর্মী এবং তাঁর ছোট ভাই ক্লাস সেভেনে পড়ে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, লেখাপড়াতে স্বপ্নদীপ খুবই ভালো ছিলেন। সারাদিন পড়াশোনা নিয়েই থাকতেন। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
জানা যায়, বুধবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিট নাগাদ ভারী কিছু পড়ার শব্দ পান হস্টেলের অন্য ছাত্ররা। তাঁরা ঘর থেকে বেরিয়ে দেখেন, নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন স্বপ্নদীপ। স্বপ্নদীপকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। তাঁর মাথায় ও শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ উঠছে।
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, স্বপ্নদীপের দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। কী ভাবে মৃত্যু হল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি ব়্যাগিংয়ের শিকার কি না, সে প্রশ্নও মাথাচাড়া দিচ্ছে। স্বপ্নদীপের মামা অরূপের অভিযোগের ভিত্তিতে যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। তাতে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।