বিচারপতি হিসাবে নিজের এক আলাদা পরিচয় তৈরি করে নিয়েছেন কলকাতা হাইকোস্টের জাস্টিস অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এজলাসে বসে সাম্প্রতিক সময় নানা ধরনের মন্তব্য করে একাধিকবার খবরের শিরোনামে এসেছেন বিচারপতি। এবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বই নিয়ে মুখ খুললেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। যা নিয়ে ফের শুরু হয়েছে বিতর্ক।
বুধবার খিদিরপুরে মাইকেল মধুসূদন লাইব্রেরির একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানেই সরকারি গ্রন্থাগারের বর্তমান অবস্থা নিয়ে বলতে গিয়ে বিতর্ক বাড়িয়েছেন বিচারপতি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম না করে তাঁর লেখা কবিতার বই তিনি বলেন, “কবিতার প্রথম লাইন এপাং ওপাং ঝপাং, আমরা সবাই ড্যাং ড্যাং। এই যদি কবিতার বই হয়, কেউ পড়বে? আমার মনে হয় কেউ পড়বে না।” বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এখানেই থামেননি। তিনি জোর গলায় বলেন, “এই অখাদ্য জিনিসগুলো গ্রন্থাগারে রাখবেন না, এটা আজ বলার সময় এসেছে। অখাদ্য বই সরবরাহ হয় সরকারি গ্রন্থাগারে, পড়তে চাইবে কোন মনুষ্য সন্তান? এই বই কিনলে তবেই সাহায্য পাওয়া যায়, না হলে পাওয়া যায় না। এই ধরনের বই সরবরাহ হলে, উইপোকা ছাড়া কারও সুবিধা হবে না।”
সরস্বতী পুজোর আগের দিন সরকারি সাহায্য নিয়েও বিস্ফোরক মন্তব্য করতে দেখা যায় বিচারপতিকে। তিনি বলেন, 'সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারগুলিতে বইয়ের তালিকা ধরিয়ে দেওয়া হয় এবং সেই বইগুলি কিনতে বাধ্য করা হয়।' পরবর্তীকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত গ্রন্থাগারের তুলনা টেনে তিনি বলেন, 'এই ধরনের বই শিশু কেন কারও পড়ার যোগ্য নয়। সরকার রয়েছে, চিন্তাভাবনা করার লোক রয়েছে। তারা নিশ্চয়ই এই বইগুলি নিয়ে ভাববেন।'
সরস্বতী পুজোর আগের দিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ে কার্যত বোমা ফাটিয়েছেন। যা ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে ইতিমধ্যে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ইতিমধ্যে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেছেন, ‘এটাই প্রমাণ হচ্ছে যে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কাজ করেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে। এজলাসে বসে তৃণমূলের মুখপাত্রের সমালোচনা, দলের লাইসেন্স বাতিল সহ নানা বিষয়ে কথা বলেন উনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিল্পসত্বা প্রতি তাঁর সমালোচনা আসলে পক্ষপাতিত্বের উদাহরণ।’