বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে দুটি মামলা থেকে সরে দাঁড়ানোর আদেশ দিয়েছে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট। তা নিয়ে এবার মুখ খুললেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলার প্রেক্ষিতে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে আদেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আর সেই মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আইনজীবী ছিলেন কংগ্রেস নেতা তথা বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি।
সেই ইস্যুতে অভিষেক মনু সিংভিকে চিঠি পাঠালেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভের। তৃণমূল কংগ্রেসের আমলে রাজ্যে নানা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ধরেছেন চিঠির ছত্রে ছত্রে। তিনি অভিষেক মনু সিংভিকে উদ্দেশ্য করে লেখেন, 'আপনি একজন কংগ্রেস নেতা। অথচ আপনার জন্য প্রদেশ কংগ্রেস বিপদে পড়েছে। একজন আইনজীবী হিসেবে কাজ করার, যে কোনও কেস লড়ার স্বাধীনতা আপনার আছে। কিন্তু, কংগ্রেসের একজন নেতা হিসেবে আপনি কখনও পার্টির প্রতি নিজের দায়বদ্ধতা অস্বীকার করতে পারেন না।'
কৌস্তভ আরও লেখেন, 'পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেস দল দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে। কিন্তু আপনি যখন সেই দলের হয়ে কেস লড়েন তখন কংগ্রেস দলের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়ে যায়। পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা আপনার কর্মকাণ্ডের জন্য লজ্জিত।'
কৌস্তভ বাগচী বাংলা.আজতক.ইন-কে আরও বলেন, 'সেদিন অভিষেক মনু সিংভি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে লড়েছেন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে মানুষের আবেগ আছে। এমন মানুষের বিপক্ষে আমাদেরই দলের নেতার কেস লড়া কংগ্রেসের পক্ষে ভালো নয়। শুধু এটা কেন, ডিএ মামলাতেও রাজ্য সরকারের পক্ষে লড়াই করছেন অভিষেক মনু সিংভি। তাঁর এই ভূমিকা আমি মোটেও ভালোভাবে নিচ্ছি না।'
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে দেশের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলা সরিয়ে নিতে হবে। সেই মর্মে হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি শিবজ্ঞানমকে নির্দেশও দেয় সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিকে এই আদেশ সামনে আসার পর বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন,‘আমার মন খারাপ নয়। কারণ এই মামলা আমি তো আমার ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে শুরু করিনি। কোনও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য সাধনের জন্যও শুরু করিনি। সুতরাং আমার কাছে (মামলা) রইল, নাকি অন্য কারও কাছে গেল, তা নিয়ে আমার বিশেষ কোনও মাথাব্যথা নেই। অপেক্ষা করুন। মামলা শেষ হয়নি। এর পরে যিনি শুনবেন তিনিও একজন হাই কোর্টের বিচারপতি। এরপরে যিনি বিচারপতি আসবেন, তিনি তাঁর স্টাইলে কাজ করবেন। আমি যে কাজ ছ’মাসে করছিলাম সে কাজ করতে গিয়ে ৬০ বছর লেগে গেলেও আমার কিছু বলার নেই। সুপ্রিম কোর্টেরও কিছু বলার নেই।'