২০১৬-র SLST-র চাকরি প্রার্থীরা দরবার করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে। প্রায় ৫০ জন চাকরি প্রার্থী আসেন বিচারপতির কাছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। চাকরিপ্রার্থীরা আবেদন করেন, যেন তাঁদের চাকরির ব্যবস্থা করা হয়। তখন বিচারপতি তাঁদের আশ্বাস দেন।
বুধবার চাকরিপ্রার্থীরা যান বিচারপতির বাড়ির কাছে। বিচারপতি নিজে আসেন বাড়ির বাইরে। তিনি কথা বলতে শুরু করেন চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে। মাঝে ফোনও করেন তিনি। ফোন করার পর চাকরিপ্রার্থীদের জানান, কোর্টে যেতে। চাকরিপ্রার্থীদের মূল অভিযোগ ছিল, দিনের পর দিন কেটে যাচ্ছে, কিন্তু যোগ্যপ্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা চাকরি পাচ্ছেন না! তাঁদের চাকরিতে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাটি হাইকোর্টের আর এক বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে বিচারাধীন। ওই মামলায় বিচারপতি বসুর একটি নির্দেশের কারণেই বিষয়টির এখনও ফয়সালা হয়নি।
তখন চাকরিপ্রার্থীরা বলেন, তাঁদের কাছে টাকা পয়সা নেই কেস চালানোর মতো। এছাড়াও বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় চাকরিপ্রার্থীদের বলেন,হাইকোর্টে লিগ্যাল এড আছে। সেখানে আবেদন করলেই আইনজীবী মিলবে। তারপরই আইনি প্রক্রিয়ায় লড়াই করতে হবে।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, 'আপনারা কান্নাকাটি করবেন না। এতে সমাধান হবে না। আইনি পথে চলুন। আমি আপনাদের প্রতি সমব্যথী। আপনারা চাকরিপ্রার্থী। আমি চাই আপনারা চাকরি পান। সবার চাকরি দরকার। আপনারা বেকার। কিন্তু আমি তো আর আমার পরিধির বাইরে যেতে পারব না। আমি আপনাদের পরামর্শ দিচ্ছি। সেটাও দেওয়ার কথা নয়।'
এরপর একজন চাকরিপ্রার্থীর প্রসঙ্গ তুলে ধরেন চাকরি প্রার্থীরা। তখন বিচারপতি জানান, তাঁকে চাকরি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সেটা মানবিকতার খাতিরে দিয়েছিলেন। সবশেষে বিতারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় চাকরিপ্রার্থীদের বলেন, 'আপনারা ভালো থাকবেন। আপনারা ভালো থাকার চেষ্টা করুন। আমি উপযুক্ত স্পিরিটে ব্যাপারটা নিয়েছি। আপনারা প্রথমবার বাড়ি বেয়ে এসেছেন। আমি খারাপভাবে নিইনি।'
তার আগে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'রবীন্দ্রনাথের একটা কবিতা আছে। সেটা নিশ্চয় আপনারা জানেন। হয়তো দুর্বৃত্তরা ঘুরে বেড়াবে আর সাধুরা জেলে থাকবে। হয়তো আমাদের ভাগ্যে লেখা আছে আমরা জেলখানায় চলে যাব।'
এরপর সাংবাদিকদের অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, 'ওঁরা অনেকদিন ধরে লড়াই করছেন। আমি ওঁদের লিগ্যাল এডে যাওয়ার কথা বলেছি। মামলাটা লড়তে হবে। তবেই ফল পাবেন। যদি আইনি জটিলতা থাকে তাহলে আইনের মাধ্যমেই তার সমাধান হবে। অনেকে আন্দোলন করছেন শুনেছি। রাস্তায় বসে আছেন। কী হয়েছে এতে ? তাঁরা কোর্টে আসুন। মামলা করুন। তাঁদের অধিকার সলিড হলে আদালতে আসুন।'