শনিবার সাংসদ-রাজ্যপাল সংঘাতে তীব্র ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হল রাজ্য রাজনীতিতে। রাজভবন থেকে অস্ত্র বিতরণের অভিযোগ তুললেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা, বিবৃতি দিল রাজভবনও। সব মিলিয়ে শনিবার সাংসদ-রাজ্যপাল সংঘাতে তীব্র ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হল রাজ্য রাজনীতিতে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, 'রাজভবনকে অপরাধীদের নিরাপদ ঘাঁটি করে তোলা হচ্ছে।' শুধু তাই নয়, হিংসায় উস্কানি দেওয়া এবং অস্ত্র সরবরাহ করারও অভিযোগ তোলেন তিনি। এরপরেই পাল্টা প্রতিবাদ জানায় রাজভবন। এক বিবৃতিতে বলা হয়, রবিবার সকাল থেকে সাধারণ মানুষ ও সাংবাদিকদের জন্য রাজভবনের দরজা খুলে দেওয়া হবে। যদি রাজভবনে অস্ত্র মজুদের প্রমাণ না মেলে, সেক্ষেত্রে কল্যাণকে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও বলা হয়।
শনিবার চুঁচুড়ার তৃণমূলের লিগ্যাল সেলের একটি সভায় গিয়েছিলেন শ্রীরামপুরের সাংসদ। সভা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন কল্যাণ। সেখানে তিনি বলেন, '‘রাজ্যপালকে আগে বলুন যেন উনি বিজেপির ক্রিমিনালদের রাজভবনে ঠাঁই দেওয়া বন্ধ করেন। রাজভবনে বসে ক্রিমিনালদের ডাকছেন। সবার হাতে একটা বন্দুক দিচ্ছেন, বোমা দিচ্ছেন। দিয়ে বলছেন, তৃণমূলকে মেরে এস। আগে এগুলো বন্ধ করতে হবে।’
এরপরই কল্যাণের মন্তব্য 'দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিভ্রান্তিমূলক' বলে পাল্টা বিবৃতি দেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি জানান, প্রয়োজনে এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে আইনি ও সাংবিধানিক পদক্ষেপও নেওয়া হবে। এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও লিখিত অভিযোগ জানাবেন রাজ্যপাল।
শনিবার কল্যাণের মন্তব্যকে কেন্দ্র করে রাজ্য রাজনীতিতে বিতর্ক তুঙ্গে ওঠে। এরই মধ্যে রাজভবন বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে জানানো হয়, রবিবার ভোর ৫টা থেকে রাজভবন চত্বর সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। সর্বোচ্চ ১০০ জনকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। তাঁরা চাইলে তল্লাশি ও পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। রাজভবনের পাল্টা দাবি, অভিযোগ সত্যি হলে তদন্ত, আর মিথ্যা প্রমাণিত হলে সাংসদকে প্রকাশ্যে দায় স্বীকার করতে হবে। রাজভবনের প্রশাসনিক কর্তাদের দাবি, রাজ্যপালের Z+ নিরাপত্তা থাকে। ফলে ভিতরে অস্ত্র ঢোকা অসম্ভব। তাছাড়া রাজভবনের সুরক্ষার দায়িত্বে কলকাতা পুলিশ থাকে। সেক্ষেত্রে অভিযোগ যদি বাস্তব হয়, তার জবাব কলকাতা পুলিশকেই দিতে হবে, সাফ বক্তব্য রাজভবন কর্তৃপক্ষের।