বউবাজারে মেট্রো-বিপত্তির অভিযোগ।-ফাইল ছবিমেট্রো চলাচল করলেই থরথর করে কাঁপতে থাকে ঘরবাড়ি! বউবাজারের বাসিন্দাদের চোখে ঘুম নেই। বহু বাসিন্দারা উদ্বেগ ও আশঙ্কাকে সঙ্গী করে দিন কাটাচ্ছেন। বহু বছর ধরে একই সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে তাঁদের। বাসিন্দারা দাবি করছেন, ফের সব বাড়ি সমীক্ষা করে দেখা হোক। কোনও বাড়ি নতুন করে ভেঙে পড়বে কী না, তা নিশ্চিত হওয়া দরকার।
সোমবার এক বৈঠকের পরে এলাকার তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে জানান, বাড়িগুলির নিরাপত্তা নিয়ে দীর্ঘদিনের আশঙ্কার জেরে বাসিন্দারা শীঘ্রই কলকাতার মেয়রের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন জানাবেন। রবিবার ভবনের একটি অংশ ভেঙে পড়ে এক বাসিন্দা আহত হওয়ার পর পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে। ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ বলেন, 'এ যেন মেট্রো মেড ভূমিকম্প। মেট্রো যাতায়াত করলেই কাঁপছে বাড়ি, অনেকেই এই অভিযোগ করছে। আমরা পুরসভাকে জানিয়েছি, পুরসভা এবার যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবে।'
কাউন্সিলরের আরও অভিযোগ, এ বিষয়ে আগেই কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল)-এর ইঞ্জিনিয়াররা কম্পন পরীক্ষা করে জানিয়েছিলেন যে, বাড়িটির ওপর কোনও বড় ধরনের ঝুঁকি নেই। ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর সেক্টর ফাইফ পর্যন্ত চলাচল শুরু হওয়ার পরেই অগাস্টে এই সমীক্ষা করা হয়েছিল। তবে রবিবারের চাঙড় খসার ঘটনার পর পরিস্থিতি নতুন মোড় নেয়। সোমবার বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয়, তাঁরা উদ্বেগ জানিয়ে মেয়রের কাছে পুনর্মূল্যায়নের আবেদন করবেন।
সোমবার কেএমআরসিএলের অফিসাররাও ১০৭, বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটি পরিদর্শন করেন। রবিবারের দুর্ঘটনার পর দিনভর তাঁরা ভবনের বিভিন্ন কাঠামোগত দিক খতিয়ে দেখেন। সংস্থার এক অফিসার জানান, 'বাড়িটি খুবই পুরোনো। কাঠামোর বহু অংশই বয়সের কারণে দুর্বল হয়ে পড়েছে। মেট্রো চলাচলের কারণে ক্ষতি হয়নি।'
অন্যদিকে, বাসিন্দারা জানান, রেল কর্তৃপক্ষ অতীতেও দুবার বাড়িটি খালি করার নির্দেশ দিয়েছিল। ফিট সার্টিফিকেট পাওয়ার পর তাঁরা ফিরে এসেছিলেন। বাসিন্দাদের প্রশ্ন, ফিট সার্টিফিকেট থাকা সত্ত্বেও রবিবার কীভাবে ছাদ ভেঙে পড়ল? রবিবারের দুর্ঘটনায় তিনতলা ভবনের ছাদ থেকে বড়সড় একটি টুকরো পড়ে ৫৯ বছর বয়সী পাপ্পু সিং আহত হন। ভবনটিতে বর্তমানে প্রায় ২৫টি পরিবার বসবাস করছে। তাঁদের দাবি, দ্রুত বিশেষজ্ঞদের দ্বারা নতুন করে মূল্যায়ন করে নিরাপত্তার বিষয়ে নিশ্চয়তা দেওয়া হোক।
উ