গত এক মাসে ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ডেঙ্গি। কলকাতা পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ দিনে শহরে ২৫০ জনেরও বেশি ডেঙ্গি রোগী শনাক্ত হয়েছে। পুরসভার রবিবারের রিপোর্ট বলছে, এ পর্যন্ত ৭৯১ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের হদিস মিলেছে, যা গত বছরের তুলনায় সামান্য বেশি হলেও ২০২৩ সালের তুলনায় কিছুটা কম।
পুরসভার অফিসাররা জানাচ্ছেন, নভেম্বর পর্যন্ত নতুন সংক্রমণের সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। কারণ, অক্টোবর জুড়ে বৃষ্টি চলায় মশার নতুন প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে।
পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রায় ৭০ শতাংশ ডেঙ্গি আক্রান্ত দক্ষিণ কলকাতা থেকে। এবং বাকিগুলি উত্তর ও মধ্য কলকাতা থেকে শনাক্ত হয়েছে। গত মাস এবং জানুয়ারি থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কয়েকটি ওয়ার্ডকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ঝুঁকিপূর্ণ ওয়ার্ডগুলির তালিকা
প্রতি ওয়ার্ডে ১০ থেকে ১৫টি ডেঙ্গির কেস পাওয়া গেছে। যেসব ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেশি, সেগুলি হল-
ওয়ার্ড ৬৫: বালিগঞ্জ পার্ক রোড, পাম অ্যাভিনিউ, ওল্ড বালিগঞ্জ ফার্স্ট লেন, আয়রন সাইড রোড
ওয়ার্ড ৬৬: তপসিয়ার কিছু অংশ
ওয়ার্ড ৬৯: বেলতলা বস্তি, আহিরিপুকুর প্রথম লেন
ওয়ার্ড ৭৯: আলিপুরের কিছু অংশ
ওয়ার্ড ৫৮: অ্যাক্টিভ একরের কাছে ডিসি দে রোড
ওয়ার্ড ৮৫: মতিলাল নেহেরু রোড, পণ্ডিতিয়া রোড
ওয়ার্ড ৮৬: গড়চা ফার্স্ট লেন
ওয়ার্ড ১০৭: হালতু
ওয়ার্ড ১০৮: আনন্দপুর
ওয়ার্ড ১০৯: মুকুন্দপুরের কিছু অংশ
ওয়ার্ড ৭৪: খিদিরপুর ও আলিপুরের কিছু অংশ
ওয়ার্ড ১৩২: পাঠকপাড়া রোড ও ১০ নম্বর বস্তি
বৃষ্টি ও নতুন সংক্রমণের আশঙ্কা
পুরসভার অফিসারদের মতে, অক্টোবর মাসে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় নতুন প্রজনন ক্ষেত্র তৈরির ঝুঁকি বাড়ছে। কাপ, প্লাস্টিকের প্লেট, বা সবুজ নারকেলের খোসার মতো ছোট পাত্রে জল জমে থাকলেই এডিস ইজিপ্টি মশা সহজেই ডিম পাড়ে।
ডেঙ্গির সংক্রমণ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-র তথ্য অনুযায়ী, ডেঙ্গি ভাইরাস মূলত এডিস ইজিপ্টি স্ত্রী মশার কামড়ে মানুষের মধ্যে ছড়ায়। তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, প্রতিদিন বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার রাখা, জল জমে থাকা জায়গা শুকনো রাখা, এবং শরীরে মশা প্রতিরোধক ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি।