কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসককে পৈশাচিক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় নতুন কিছু তথ্য উঠে এসেছে। পুলিশের তদন্তে ধৃত সঞ্জয় রায়ের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। জানা গেছে, ঘটনার রাতে সঞ্জয় একাধিকবার হাসপাতালে ঢুকেছিল, যা তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে কাজ করছে।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সঞ্জয় রাত ১১টার দিকে হাসপাতালের পিছনের একটি নির্দিষ্ট জায়গায় মদ্যপান করতে গিয়েছিল। এই জায়গাটি ছিল তার নিয়মিত আস্তানা, যেখানে সে মদ্যপানের পাশাপাশি বিকৃত পর্নোগ্রাফি দেখত। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সঞ্জয় যে ধরনের পর্নোগ্রাফি দেখত, তা অত্যন্ত বিকৃত এবং অস্বাভাবিক।
অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময়, অর্থাৎ ভোর ৪টার দিকে, হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ৫ থেকে ৬ জন ব্যক্তি চেস্ট মেডিসিন বিভাগে প্রবেশ করেছিল। তবে তাদের সবাইকে পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, কারণ তারা হাসপাতালের অন্য রোগীদের আত্মীয় ছিলেন। কিন্তু সঞ্জয় রায়ের ওই বিভাগের ভেতরে ঢোকার কোনও যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিল না। ফলে তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, সঞ্জয় অপরাধের পর প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টাও করেছিল। সে ঘটনাস্থল থেকে রক্তের দাগ মুছে ফেলার চেষ্টা করে, যা সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। সেই ফুটেজে আরও দেখা গেছে, সঞ্জয় ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে সেমিনার কক্ষ থেকে বেরিয়ে যায় এবং ৪র্থ ব্যাটালিয়নের ব্যারাকে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
পুলিশ তাকে সেখান থেকে গ্রেফতার করে। সেইসময় সঞ্জয় পুরোপুরি মাদকাসক্ত অবস্থায় ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তার বিকৃত মানসিকতা এবং অপরাধের ধরন দেখে এটি নিছক হত্যাকাণ্ড নয়, বরং বিকৃত মানসিকতার পরিচায়ক। এই মামলার তদন্ত এখনও চলছে এবং পুলিশ প্রমাণ সংগ্রহের কাজ করছে। তবে এই ঘটনায় সঞ্জয়ের ভূমিকা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে, যা বিচার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।