Kasba Gangrape Case: কসবা গণধর্ষণ নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে দলের রোষে তৃণমূলের দুই নেতা। সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ত মদন মিত্রের মন্তব্যকে দল সমর্থন করছে না বলে বিবৃতি দিয়ে তৃণমূলের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই মন্তব্য তাঁদের একান্ত ‘ব্যক্তিগত’ বলে ফেসবুক ও এক্স হ্যান্ডেলে জানিয়ে দিয়েছে। দুই নেতার মন্তব্যেরই কড়া নিন্দা করেছে শীর্ষ নেতৃত্ব। পাশাপাশি দোষীদের কড়া শাস্তির দাবিও জানানো হয়েছে। যদিও দলের এই বিবৃতির বিরুদ্ধে ফের সরব হয়েছেন কল্যাণ। তিনি পাল্টা বিবৃতি দিয়েছেন।
শুক্রবার সকাল থেকে কসবার আইন কলেজে গণধর্ষণের ঘটনা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। নির্যাতিতা দাবি করেন, বুধবার সন্ধ্যায় তাঁকে ডাকা হয়েছিল গার্ড রুমে। অভিযোগ, তিনি সেখানে গেলে তাঁর উপর চড়াও হন তিনজন। গণধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। কাউকে কিছু না বলতে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরে ওই ছাত্রী কসবা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “একজন ছাত্রীকে যদি তার সহপাঠীরা রেপ করে থেকে দুঃখের খবর আর কি হতে পারে।” এই মন্তব্য নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। দল পড়ে যায় অস্বস্তিতে। তার রেশ কাটার আগেই শনিবার ফের বিতর্কিত মন্তব্য করেন বিধায়ক মদন মিত্র। তাঁর কথায়, “কসবার এই ঘটনায় মেয়েদের কাছে, পড়ুয়াদের কাছে একটা বার্তা পৌঁছে গিয়েছে। যদি চেনা-পরিচিত কেউ ডাকে, যেদিন কলেজ বন্ধ, পরীক্ষা চলছে, ইউনিটের কিছু বানিয়ে দেবে, যেও না, ভালো হবে না। মেয়েটি ওখানে না গেলে এই ঘটনা ঘটত না। যদি যাওয়ার সময় কাউকে বলে যেত, ২ জন বান্ধবীকে সঙ্গে নিয়ে যেত, তাহলে এই ঘটনা ঘটত না। যে এই নোংরা কাজ করেছে, সে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়েছে।” যদিও এরপর দোষীর কড়া শাস্তির দাবি করেন তিনি। তবে দল তাঁর মন্তব্যকেও ভালভাবে নিচ্ছে না তা পরিষ্কার করে দিয়েছে। তাঁদের মন্তব্যের দায় যে নিতান্তই তাঁদের নিতে হবে সেটাও সাফ করে দিয়েছে।
তৃণমূলের তরফে বিবৃতি জারি করে তারা বলে, ‘সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনা প্রসঙ্গে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিধায়ক মদন মিত্র যে মন্তব্য করেছেন, তা তাঁদের ব্যক্তিগত মতামত। দল তাঁদের বক্তব্যের সঙ্গে কোনোভাবেই একমত নয় এবং এই মন্তব্যগুলিকে কড়াভাবে নিন্দা করছে। এই ধরনের বক্তব্য কোনওভাবেই দলের অবস্থানকে প্রতিফলিত করে না।’ একইসঙ্গে তাদের দাবি, ‘আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—মহিলাদের ওপর অপরাধের ক্ষেত্রে বরাবরই জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও করা হবে। যারা এই নৃশংস ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে যেন কঠোরতম শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়।’ সবমিলিয়ে দুই নেতার মন্তব্যের সঙ্গেই দূরত্ব বাড়াল তৃণমূল।
দলের পোস্টকে উদ্ধৃত করে সেটিকে রি-পোস্ট করেছেন সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তিনিও দলের পক্ষে এবং এই ধরণের দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি করেছেন।
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মদন মিত্রের নাম উল্লেখ না করেই তাদের বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন। তৃণমূলের এক্স পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় মহুয়া মৈত্র লিখেছেন, 'ভারতে নারীদের প্রতি ঘৃণা দলীয় গণ্ডির বাইরে। তৃণমূল কংগ্রেসকে অন্যান্য দল থেকে আলাদা করে তোলে এটাই অর্থাৎ, আমাদের দল এই ঘৃণ্য মন্তব্যের নিন্দা করে, তা যেই করুক না কেন।'' তবে, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর দলের বক্তব্যের সাথে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তিনি একটি সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লিখেছেন, 'X-তে তৃণমূল কংগ্রেসের করা পোস্টের সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত নই। দল কি পরোক্ষভাবে সেই নেতাদের সমর্থন করছে যারা এই অপরাধীদের রক্ষা করছে?'