গত সপ্তাহের ভোগান্তির পর ফের চলতি সপ্তাহেও মেট্রোয় বিভ্রাট। সপ্তাহের মাঝামাঝি কর্মব্যস্ত দিনে নাকাল যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই একের পর এক স্টেশনে মেট্রোর নির্ধারিত সময়ে না ঢোকায় ক্ষোভ উগরে দেন যাত্রীরা। বিভিন্ন স্টেশনে দীর্ঘক্ষণ ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকারও অভিযোগ উঠেছে। স্কুল-কলেজ, অফিস-কর্মস্থলে পৌঁছতে দেরি হওয়ায় দুর্ভোগের শিকার নিত্যযাত্রীরা। কী বলছে কর্তৃপক্ষ?
কেন মেট্রো পরিষেবায় বিঘ্ন
এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন স্টেশনে নির্ধারিত সময়ে মেট্রো না আসায় ভিড় বাড়তে থাকে। অনেক স্টেশনে বহু যাত্রীকে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা যায়। মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, 'সকাল ৭টা নাগাদ প্রতিদিনই নোয়াপাড়া এবং কবি সুভাষ কারশেড থেকে মেট্রো লাইনে ফিট করতে হয় রেকগুলিকে। এদিন সকালে নোয়াপাড়ার থার্ড লাইনে পাওয়ারের সমস্যা দেখা যায়। যার ফলে কিছু রেককে ইনজেক্ট করা গিয়েছিল, কিছু রেককে করা যায়নি। যেগুলি ইনজেক্ট করা গিয়েছিল এবং কবি সুভাষ থেকে যেগুলি পাওয়া গিয়েছিল, সেগুলি দিয়েই পরিষেবা চালাতে হচ্ছিল। দমদম থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল এবং প্রতি অলটারনেট রেক আমাদের পাঠাতে হচ্ছিল দক্ষিণেশ্বরে। সবকটা রেক দক্ষিণেশ্বরে যাওয়ার কথা কিন্তু সেগুলি পাঠানো সম্ভব হচ্ছিল না সে সময়ে। ৮টা ৪০ মিনিট নাগাদ বিদ্যুৎ পরিষেবা ঠিক হয় এবং তখন পরিষেবাও স্বাভাবিক হয়।' তবে যাত্রীদের দাবি, স্বাভাবিক হওয়ার দাবি করলেও বেশ কয়েকটি স্টেশনে ৫ মিনিটেরও বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেন। এর জেরে কর্মব্যস্ত দিনে গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয় তাঁদের। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, 'দীর্ঘক্ষণ ধরে সমস্যা হয়েছিল এমনটাও নয়।'
কেউ বলেন, কবি সুভাষ থেকে রবীন্দ্র সরোবর যাওয়ার জন্য মেট্রো ধরতে এসে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। কারও আবার অভিযোগ, দক্ষিণেশ্বর থেকে পার্ক স্ট্রিট পৌঁছতে অতিরিক্ত সময় লেগেছে, লেট মার্ক পড়েছে অফিসের খাতায়। মেট্রোতে সমস্যা নিত্য দিনের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে ক্ষোভ উগরে দেন অধিকাংশই।
মেট্রোয় জল ঢুকে সমস্যা
গত সপ্তাহে শনিবার সকালে দমদম থেকে কবি সুভাষ রুটের ডাউন লাইনে একাধিক মেট্রো পর পর দাঁড়িয়ে থাকার অভিযোগ ওঠে। উইকএন্ড হলেও ব্যস্ত সময়ে দীর্ঘসময় ধরে পরিষেবা থমকে থাকায় তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নিত্যযাত্রীরা। মেট্রোর তরফে জানা হয়, যতীন দাস পার্ক স্টেশনে নিউ গড়িয়ামুখী মেট্রোর একটি রেক খারাপ হয়ে গিয়েছে। সে কারণেই কিছুটা সময় ওই রুটের ডাউন লাইনে পর পর মেট্রো দাঁড়িয়ে যায়। তবে যাত্রীদের বক্তব্য, ডাউন লাইনে মেট্রো প্রতিটি স্টেশনে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ থমকে যায় ট্রেন। ফলে পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার দাবি করা হলেও আদতে অনেকটাই সময় লেগেছে বলে অভিযোগ যাত্রীদের। তার কিছুদিন আগেই ভারী বৃষ্টির কারণে জল জমে মেট্রোর সুড়ঙ্গপথেও। আর সে কারণেই কর্মব্যস্ত দিনে মেট্রো পরিষেবায় বিভ্রাট দেখা দেয়। ময়দান থেকে গিরিশ পার্ক পর্যন্ত বন্ধ থাকে মেট্রো চলাচল। মেট্রোর তরফে জানানো হয়, আপ লাইনে জল জমে থাকার দরুণ ট্রেন এগোনো সম্ভব হয়নি। জানা যায়, সেন্ট্রাল এবং চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশনের মধ্যবর্তী অংশে রেললাইনে জল জমেছে। সে কারণেই কোনও ঝুঁকি না নিয়ে পরিষেবা সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় মেট্রো কর্তৃপক্ষ।