এবার কলকাতা মেট্রো আরও আধুনিক হচ্ছে। প্রযুক্তিগত পরিবর্তনে গতি বাড়তে চলেছে কলকাতা মেট্রোর। সেইসঙ্গে কলকাতা মেট্রো লন্ডন, মস্কো, বার্লিন, মিউনিখ এবং ইস্তাম্বুলের অভিজাত মেট্রোর সিস্টেম যোগ করত চলেছে। এবার স্টিলের বদলে থার্ড লাইনে বসছে কম্পোজিট অ্যালুমিনিয়াম। ওই লাইনটি থেকে ট্রেনে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়। কলকাতা মেট্রোতে স্টিল থার্ড রেলের মাধ্যমে 750V DC-তে রোলিং স্টকে রেকে পাওয়ার সরবরাহ করা হয়।
স্টিলের তৈরি থার্ড রেল কারেন্ট কালেক্টর (TRCC) এবং মেট্রো রেকে লাগানো তৃতীয় রেল থেকে বিদ্যুৎ সংগ্রহ করে -- একটি প্রক্রিয়া যা গত ৪০ বছর ধরে চলছে।
"কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে এখন স্টিল থার্ড রেল-সহ বিদ্যমান করিডোরে রেট্রো ফিটমেন্ট সহ নির্মাণের জন্য যে সমস্ত আসন্ন করিডোর তৈরি করা হচ্ছে সেখানে কম্পোজিট অ্যালুমিনিয়াম থার্ড রেল ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ এই মেট্রো রেলের মাধ্যমে কলকাতা লন্ডনের অভিজাত ক্লাবের সদস্য হয়ে উঠবে৷ , মস্কো, বার্লিন, মিউনিখ এবং ইস্তাম্বুল মেট্রো যা ইস্পাত তৃতীয় রেল থেকে অ্যালুমিনিয়াম তৃতীয় রেলে স্থানান্তরিত হয়েছে। রেল মন্ত্রক সূত্রে একথা জানানো হয়েছে।
কলকাতা মেট্রো প্রথম পর্যায়ে দমদম এবং শ্যামবাজার স্টেশনগুলির মধ্যে অংশটি কভার করার জন্য বিদ্যমান তৃতীয় রেলের প্রতিস্থাপনের জন্য একটি টেন্ডার তৈরি করেছে। দ্বিতীয় ধাপে শ্যামবাজার থেকে সেন্ট্রাল এবং জেডি পার্ক থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত কাজ করা হবে। তৃতীয় পর্যায়ে, মহানায়ক উত্তম কুমার (টালিগঞ্জ) এবং কবি সুভাষ (নতুন গড়িয়া) স্টেশনগুলির মধ্যে কাজ হবে। এভাবে মোট ৩৫ RKm (রুট কিলোমিটার) মেইন লাইন স্টিল থার্ড রেল পর্যায়ক্রমে প্রতিস্থাপন করা হবে।
স্টিল থার্ড রেলের উপরে অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট থার্ড রেলের সুবিধা হল যে, প্রতিরোধক কারেন্ট লস হ্রাস পাবে এবং একটি উন্নত ট্র্যাকশন ভোল্টেজ স্তর থাকবে কারণ স্টিল থার্ড রেলের রেজিস্ট্যান্স কম্পোজিট অ্যালুমিনিয়াম থার্ড রেলের তুলনায় প্রায় ছয় গুণ বেশি।
রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অ্যালুমিনিয়াম থার্ড রেলের ব্যবহারে ‘ট্র্যাকশন ভোল্টেজ লেভেল’ পরিস্থিতির লক্ষ্যণীয় উন্নতি হবে। এর ফলে ভোল্টেজ-ড্রপ তুলনামূলকভাবে অনেকটাই হ্রাস পাবে। যার জেরে ‘অ্যাক্সিলারেট’ করা যাবে অনেক দ্রুত গতিতে। অর্থাৎ, সর্বোচ্চ গড় গতিতে উঠতে বর্তমানে কলকাতা মেট্রোর একটি ট্রেন যে সময় নেয়, নয়া ব্যবস্থা কার্যকর হলে সেই সময় আরও কম লাগবে।
কলকাতা মেট্রো সূত্রে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে সকাল এবং সন্ধের পিক আওয়ার্সে প্রতি পাঁচ মিনিটের ব্যবধানে মেট্রো পান যাত্রীরা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রতি আড়াই থেকে তিন মিনিটে মেট্রো আসার সম্ভাবনা রয়েছে। একইসঙ্গে ৩৫ কিলোমিটার অংশ অ্যালুমিনিয়াম থার্ড রেলে রূপান্তরিত হয়ে গেলে প্রায় ২১০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে মেট্রো কর্তৃপক্ষের। কারণ এর ফলে বিদ্যুৎ অপচয় অনেক কম হবে। এনার্জি লসের হার কমে যাবে অন্তত ৮৪ শতাংশ। মেট্রো কর্তৃপক্ষের আশা, ক্ষতির পরিমাণ কমলে অপারেটিং রেশিওর হারও উন্নত হবে।