জুলাইয়ের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে শহর কলকাতা টানা বৃষ্টিতে ভিজছে। আর তার জেরে একদিকে যেমন শহরবাসীর দুর্ভোগ চরমে, তেমনই অন্যদিকে আগ্রহও তুঙ্গে। এবার কি তবে নতুন বৃষ্টির রেকর্ড গড়তে চলেছে কলকাতা?
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ২০১৫ সালে জুলাই মাসে কলকাতায় সর্বোচ্চ ৬৭৪.৩ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছিল। এবছর, ২০২৫ সালের জুলাইয়ে ইতিমধ্যেই বৃষ্টির পরিমাণ ৬০০ মিমি ছুঁইছুঁই। আর মাস শেষ হতে বাকি মাত্র দু’দিন! ফলে শহরবাসীর মনে প্রশ্ন, পুরনো রেকর্ড কি টপকে যাবে এবার?
গত মঙ্গলবার দমদম, বারাকপুর, বিধাননগর, বারাসত–সহ কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। জল জমে গেছে ভিআইপি রোডে, হলদিরাম মোড় সহ একাধিক জায়গায়। যান চলাচলে ব্যাঘাত, দীর্ঘ যানজটের মুখে পড়েছেন যাত্রীরা।
উত্তর শহরতলিতে বেহাল ড্রেনেজ ব্যবস্থার চিত্র আবারও সামনে এসেছে। বরানগর, কামারহাটি, পানিহাটি, আড়িয়াদহ, দক্ষিণেশ্বর, সব জায়গায় রাস্তাঘাট হাঁটু সমান জলে ডুবে গেছে। পানিহাটি হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতেও জল ঢুকে গেছে। কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের দু’ধার, ব্যারাকপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জলমগ্ন।
উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা, সুটিয়া, বলদেঘাটা, আংরাইল-সহ গ্রামীণ এলাকাগুলির ছবিও ভয়াবহ। জমির ফসল জলের তলায়, বাড়ি ও উঠোনে জল ঢুকে জনজীবন বিপর্যস্ত। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, তিন মাস ধরে এভাবেই জলকষ্টে দিন কাটছে।
কলকাতা পুরসভার আজকের বৃষ্টির পরিসংখ্যানও চোখে পড়ার মতো। বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গড়িয়া মার্কাস স্কোয়ারে সর্বোচ্চ ৬২ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে কামদহরি (৪৭ মিমি)। অন্যান্য অঞ্চলের মধ্যে জোকা ৩৫ মিমি, ধাপা ২৪ মিমি, তোপসিয়া ২৩ মিমি, বীরপাড়া ২০ মিমি, দত্তবাগান ও ঠনঠনিয়া ১৯ মিমি, বেলগাছিয়া ও উল্টোডাঙ্গা ১৮ মিমি, মানিকতলা ১৭ মিমি, বালিগঞ্জ ১৪ মিমি, কালীঘাট ১২.৮ মিমি এবং বেহালা ১৬.২ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী ২৪–৪৮ ঘণ্টা দক্ষিণবঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাত চলবে। সক্রিয় মৌসুমী অক্ষরেখা, উত্তরপূর্ব আরব সাগর থেকে দক্ষিণ বাংলাদেশ পর্যন্ত নিম্নচাপ অক্ষরেখা এবং পশ্চিমী ঝঞ্ঝা, সব মিলিয়ে রাজ্যে ঢুকছে প্রচুর জলীয় বাষ্প। এই পরিস্থিতি বহাল থাকবে অগাস্টের প্রথম সপ্তাহেও।