নিউটাউনের সিই-১৩২ নম্বর বাড়িতে অনলাইন গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে কোটি টাকার প্রতারণা চক্রের হদিস পেয়েছে পুলিশ। প্রায় দেড় মাস ধরে চলা এই প্রতারণা চক্রের অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে নিউটাউন থানার পুলিশ। ধৃতরা মূলত উত্তরাখণ্ড ও ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা।
তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্তরা একটি অনলাইন গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের প্রথমে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিয়ে গেম খেলার প্রলোভন দেখাত। প্রাথমিক পর্যায়ে জেতা টাকা তুলতে পারলেও, পরবর্তীতে বেশি পরিমাণ টাকা দিয়ে গেম খেলার পর জেতা টাকা তুলতে গেলে নানা অজুহাতে তা আটকে দেওয়া হতো। এভাবে অনেকেই প্রতারণার শিকার হন।
যুব সম্প্রদায়ের একটা অংশ অনলাইন গেমে মত্ত। আর সেই অনলাইন গেম খেলতে গিয়েই নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। পুলিশ সূত্রে খবর, দুবাই থেকে অপারেট হওয়া একটি অনলাইন গেম প্রতারণা চক্রের অংশ হিসেবে, নিউটনের সিই ব্লকে বেশ কিছুদিন ধরেই একটি অফিস খোলা হয়। সেখান থেকেই চলত প্রতারণা চক্র। এদিকে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেই অফিসে হানা দেয় নিউটাউন থানার পুলিশ। সেখান থেকে মোট ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এরা মূলত উত্তরাখণ্ড এবং ছত্তিশগড়ের বাসিন্দা।
তল্লাশি চালিয়ে ওই অফিস থেকে বহু নথি, একশটির মতো সিম কার্ড, এটিএম কার্ড ও পাসবই উদ্ধার হয়। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানতে পারে, এই গেম যাঁরা ডাউনলোড করেন তাঁরা প্রথমে নির্দিষ্ট একটি টাকা ডিপোজিট করে গেম খেলা শুরু করেন। পরবর্তীতে বেশি অ্যামাউন্টের টাকা দিয়ে গেম খেললেও, জেতা টাকা উইড্র করতে গেলে নানা অজুহাত দেখান হত বলে অভিযোগ। এইভাবে জেতা টাকা আর কার্যত পাওয়া যেত না বলেই অভিযোগ। এই বিষয়ে তদন্তে নেমে ১০ জনতে গ্রেফতার করে পুলিশ। এই চক্রের সঙ্গে আরও কারা কারা জড়িত, এই অফিস ছাড়াও আরও কোনও অফিস রয়েছে কি না, সেই সমস্ত বিষয়ে জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদে দুবাইয়ের সাথে এই চক্রের সংযোগের তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তকারীরা খতিয়ে দেখছেন, এই চক্রের সাথে আর কারা জড়িত এবং অন্য কোথাও এদের অফিস রয়েছে কিনা। ধৃতদের শনিবার বারাসত আদালতে তোলা হবে। পুলিশের এই সফল অভিযানে অনলাইন গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণার একটি বড় চক্রের পর্দাফাঁস হয়েছে। তবে, সাধারণ জনগণকে এ ধরনের প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সংবাদদাতা-অরিন্দম ভট্টাচার্য