কখনও রামমন্দির, আবার কখনও লালকেল্লা। দুর্গাপুজোর থিমে বারবার চমক দিয়ে এসেছে সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার। এবারও পুজোর থিমে চমক দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এই পুজো কমিটির। এবার তাদের থিম 'অপারেশন সিঁদুর', বিজেপি নেতা সজল ঘোষ সম্প্রতি এই ঘোষণা করেন। লেবুতলা পার্কের এই পুজোর প্রধান উদ্যোক্তা সজল ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় সন্তোষ মিত্র স্কোকায়ের এবারের পুজোর থিমের কথা ঘোষণা করেন। এরপরেই পুজো বন্ধের নোটিস মিলেছে বলে দাবি করলেন তিনি।
বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই নোটিস পোস্ট করেন সজল ঘোষ। প্রসঙ্গত সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের এ বারের থিম 'অপারেশন সিঁদুর'। থিম ঘোষণার পরই মিলেছে পুলিশের ক্রাউড ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত নোটিস, দাবি করেছেন বিজেপি নেতা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে পুজো বন্ধ করতেই মুচিপাড়া থানার পুলিশ এই নোটিস পাঠিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সজল ঘোষ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশের পাঠান এই নোটিস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার পুজো কমিটির অন্যতম প্রধান কর্মকর্তা সজল ঘোষ। বিজেপি নেতার অভিযোগ, থিম ঘোষণার দুদিনের মধ্যেই তাঁদের পুলিশের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পুজো কমিটিকে একাধিক বিষয়ে সতর্ক করে নিয়ম মানতে বলা হয়েছে। নাহলে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এই নির্দেশিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতা। সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে সজল ঘোষের প্রশ্ন, 'আমি জানতে চাই আর কটা পুজো কমিটিকে সারা পশ্চিমবঙ্গে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে? নিশ্চিত, কাউকে নয়। তাহলে তারা কি সবাই আইনের উর্ধ্বে, নাকি আমাদের জন্য আলাদা আইন?' সব অন্যায়ের বিচার খুব শীঘ্রই হবে বলেও পোস্টে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
প্রসঙ্গ সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের দুর্গাপুজোর আয়োজন মানে আলাদা আকর্ষণ। পুজো আসার অনেক আগে থেকেই মানুষ খোঁজ রাখেন এ বার কোন থিমে হবে মণ্ডপ। ভিড় নিয়ন্ত্রণে নিতে গত কয়েক বছর বিতর্কও তৈরি হয়েছে লেবুতলা পার্ক নামেও পরিচিত এই পুজোকে ঘিরে। গত বছরও এমন চিঠি সজলের পুজো কমিটিকে পাঠানো হয়েছিল। সেই একই ধাঁচে এবারেও চিঠি পাঠিয়েছে কলকাতা পুলিশ। বিজেপি নেতা সজল ঘোষ এই চিঠিকে পুলিশের 'প্রেমপত্র' বলে কটাক্ষ করেছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি আরজি কর আন্দোলনে চিকিৎসদের হাতে থাকা প্রতীকী মেরুদণ্ডের কথাও টেনে আনেন। তাঁর খোঁচা, 'বোঝাই যাচ্ছে, ডাক্তারদের দেওয়া শিরদাঁড়াটা খুব একটা ভাল কোয়ালিটির ছিল না।'
পুলিশের চিঠিতে কী বলা হয়েছে?
পুলিশ সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার পুজো কমিটিকে পাঠান চিঠিতে বলেছে, গত পুজোকে কেন্দ্র করে পদপিষ্টের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে পদক্ষেপ করতে হবে। পুজো মণ্ডপে প্রবেশ ও বাহিরের পথ চওড়া করতে হবে। পুলিশের নজরদারির জন্য মন্ডপের ভেতরেও নির্দিষ্ট জায়গা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোনও লেজার/লাইট/সাউন্ড শো করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। অন্যদিকে, মন্ডপে প্রবেশ ও বাহিরের পথে কোথাও যেন কোনও স্টল না রাখা হয়, তাও নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে উদ্যোক্তাদের। একই সঙ্গে, সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়াতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভিড় সামলাতে পিক আওয়ারে কমপক্ষে ২৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক এবং কম সময়ে ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক রাখার কথা বলা হয়েছে।