আরজি করকাণ্ডে প্রতিবাদে সরব নাগরিক সমাজ। কর্মবিরতি চালাচ্ছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় সমাজের সর্বস্তরে ক্ষোভের বাতাবরণ। এই আবহে এবার পুজোর আমেজ অন্যরকম কলকাতায়। পুজোর মধ্যে আন্দোলন শুরু হলে, কীভাবে মোকাবিলা করা হবে, তা নিয়ে শুক্রবার জানালেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা।
এদিন কলকাতার পুজোর ম্যাপ উদ্বোধন করা হয়। সেখানে নগরপাল জানান যে, পুজোর সময় শহরে যাতে কোনওরকম গোলমাল না হয়, তার জন্য সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে ঠাকুর দেখতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। থাকছে হেল্পলাইন ফোন।
অন্য দিকে, আরজি করকাণ্ডে গত প্রায় ২ মাস ধরে শহরে নানা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। পুজোর মধ্যে আন্দোলন শুরু হলে কী ভাবে সামলানো হবে, এই প্রসঙ্গে সিপি বলেন, 'সব ব্যবস্থা করা আছে। আশা করছি, পুজোয় কোথাও কোনও বাধা তৈরি হবে না।'
আরজি করকাণ্ডে বিচারের দাবিতে বুধবার কলকাতায় মহামিছিল করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মিছিলে শামিল হয় নাগরিক সমাজ। মহালয়ায় ভোর দখল কর্মসূচিও পালন করা হয়। ফের পূর্ণ কর্মবিরতি শুরু করেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। পুজোর সময় পূর্ণ কর্মবিরতি চালাবেন কি না, সে নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আজ সিনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে সেই বৈঠক শেষ হলেও এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সিদ্ধান্তের কথা জানা যায়নি।
এর আগে, ধর্ষণ-খুনের ঘটনার প্রতিবাদে দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে কর্মবিরতি চালাচ্ছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। পাশাপাশি, পথে নেমে প্রতিবাদে শামিল হন তাঁরা। ৫ দফা দাবিতে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থানে বসেন তাঁরা। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের অপসারণের দাবিতে লালবাজার অভিযানও করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে দীর্ঘ বৈঠক করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। দীর্ঘ সেই বৈঠকের পর জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মতো কলকাতার পুলিশ কমিশনার, স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তাকে সরানো হয়েছে। তবে আরও কিছু দাবি রয়েছে জুনিয়র ডাক্তারদের। সেই দাবি পূরণ করতে আলোচনায় বসার জন্য রাজ্যকে ফের ইমেল পাঠান তাঁরা। এরপরে নবান্নে মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জুনিয়র ডাক্তাররা। দীর্ঘ সেই বৈঠকে মিনিটসে সই করা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয় বলে অভিযোগ। জুনিয়র ডাক্তারদের বাকি দাবিগুলির মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্য সচিবের অপসারণ এবং নিরাপত্তার বিষয়টি। পরে তাঁরা আংশিক কর্মবিরতি চালান। স্বাস্থ্য ভবনের সামনে অবস্থান তুলেছেন। তবে গত সপ্তাহ থেকে ফের পূর্ণ কর্মবিরতিতে ফিরেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা।
ইতিমধ্যেই কলকাতার বেশ কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন হয়েছে। মহালয়া থেকেই ঠাকুর দেখার ভিড় চোখে পড়েছে। কলকাতার অন্যতম বড় পুজো শ্রীভূমিতে মহালয়ার সন্ধ্যায় কার্যত জনজোয়ার নেমেছিল। পুজোয় কলকাতার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।