জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাট কেনার খরচ বাড়তে চলেছে। কারণ রাজ্য সরকার সার্কল রেট বাড়িয়েছে। তাই জমি-বাড়ির রেজিস্ট্রেশনের খরচ বাড়বে। সম্প্রতি, রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে সার্কল রেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত পাস হয়েছে। সার্কল রেট হল নির্দিষ্ট একটি এলাকায় অবস্থিত জমি-বাড়ির ন্যূনতম মূল্য। সেই মূল্য ঠিক করে সরকার। এই মূল্যের ভিত্তিতেই ধার্য হয় সম্পত্তি কেনাবেচার রেজিস্ট্রেশন ফি ও স্ট্যাম্প ডিউটিক মোট খরচ। গোদা বাংলায়, জমি ও বাড়ি কিনতে মোট কত টাকা খরচ হবে।
রাজ্যে অর্থ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত বছর পর এই সার্কল রেটে বদল আনা হল। গত কয়েক বছরে গোটা রাজ্যেই পরিকাঠামো উন্নয়নের জেরে ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে জমি-বাড়ির বাজার দর। ফলে রাজ্যের নির্ধারিত মূল্যের সঙ্গে বাজার দরের বড়সড় ফারাক তৈরি হয়েছে। সেই কারণেই সার্কল রেট বাড়ানো হল ১২ থেকে ৯০ শতাংশ হারে। এ বছর সেপ্টেম্বর থেকে এই রেট লাগু হবে। প্রতি বর্গফুটের জন্য এই রেট। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাটের দাম কয়েক বছরে বেড়েছে। কিছু ক্ষেত্রে তা দ্বিগুণ। সে ক্ষেত্রে সরকারের আয় বাড়াতে সার্কল রেট বৃদ্ধি ছাড়া আর কোনও বিকল্প কোনও পথ ছিল না বলেই নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।
বর্তমানে সম্পত্তির দামের উপরে এক শতাংশ হারে রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হয়। পাশাপাশি, স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয় পাঁচ থেকে সাত শতাংশ। গ্রামীণ এলাকার স্ট্যাম্প ডিউটি ন্যূনতম পাঁচ শতাংশ। শহর এলাকার জন্য সেটাই ছয় শতাংশ। সম্পত্তির মূল্য এক কোটি টাকার বেশি হলে অতিরিক্ত এক শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি দিতে হয়। অর্থাৎ মোট ৭ শতাংশ।
কোথায় কত সার্কেল রেট:
বর্তমান রেট আগের রেট
মহিষবাথান: ১২ হাজার ৬৫ টাকা ৬ হাজার ৪৪২ টাকা
টলিগঞ্জ: ১০ হাজার ২১২ টাকা ৮ হাজার ২৫০ টাকা)
তপসিয়া: ৯ হাজার ৮৫২ টাকা ৫ হাজার ৮৮১ টাকা
বিটি রোড, বরানগর: ৮ হাজার ৮৫০ টাকা ৪ হাজার ৭০৮ টাকা
বেহালা, বড়িশা: ৭ হাজার ৯৫ টাকা ৪ হাজার ২৯২ টাকা
সোনারপুর: ৬ হাজার ২৩৭ টাকা ৩ হাজার ৪১২ টাকা
নিউ টাউন: ৬ হাজার ২০৯ টাকা ৩ হাজার ৫৩৫ টাকা
সার্কল রেট বৃদ্ধির সঙ্গে জমি বাড়ি কেনার খরচ বেড়ে যেতে পারে। তাতে জমি ও বাড়ি কেনা বেচা কমে যেতে পারে। স্ট্যাম্প ডিউটি এবং রেজিস্ট্রেশনের জন্য সম্পত্তি কেনার খরচ বাড়বে। এর জেরে বিক্রিতে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সার্কেল রেট বৃদ্ধির জেরে ফ্ল্যাটের বিক্রিতে ধাক্কা আসতে পারে বলে মনে করছেন ডেভেলপারদের একাংশ। কোনও কোনও এলাকায় ফ্ল্যাটের দাম এক কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। তখন এর রেজিস্ট্রেশনের জন্য গুনতে হবে অতিরিক্ত এক শতাংশ স্ট্যাম্প ডিউটি।