
জল কিছু নামলেও এখনও জনযন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না কলকাতাবাসী। কলকাতার বিভিন্ন অংশে এখনও জল জমে রয়েছে। পুজোর আগে এই পরিস্থিতিতে মাথায় হাত পুজো উদ্যোক্তাদের। সমস্যায় পড়বেন বহু মানুষ। সাধারণত পঞ্চমী থেকেই ঠাকুর দেখতে ঢল নামে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে। তাই পঞ্চমীর আগে কলকাতার বিভিন্ন রাস্তায় জল নামবে কি না তা বোঝা যাচ্ছে না। পুজো মানেই ব্যবসা। সেটাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে বহু কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে।
মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে আর বৃষ্টি হয়নি। বুধবার সকালে এখনও জল জমে কলকাতার বিভিন্ন রাস্তা ও এলাকায়। চালতা বাগান,ঠনঠনিয়া থেকে গড়িয়া, নিউ গড়িয়া, সব এলাকাতেই জল জমেছে। কসবা, বালিগঞ্জ ফাঁড়ি, সুকিয়া স্ট্রিট-সহ কলকাতার বহু রাস্তায় এখনও গোড়ালি সমান, কোথাও হাঁটুসমান জল জমে। তবে, আগে যে সব জায়গায় প্রায় হাঁটুসমান জল জমে ছিল, সেখানে এখন কোথাও গোড়ালি সমান, কোথাও বা তার চেয়ে কিছু বেশি জল জমে রয়েছে। রাতে কলকাতা পুরসভা বিভিন্ন জায়গায় পাম্প বসিয়ে জল নামানোর কাজ চালিয়েছে। তার ফলে কলকাতার মূল রাস্তাগুলিতে জল নেমেছে। বাস চলছে, চলছে মেট্রোও।
কলেজ স্ট্রিটে রাস্তার একটি অংশে এখনও কিছুটা জল জমে আছে। এ ছাড়া ঠনঠনিয়া, রাজা রামমোহন সরণি, কেশব সেন স্ট্রিট, আনন্দ পালিত রোড, বালিগঞ্জ ফাঁড়ি, ভিআইপি বাজার, টেগোর পার্ক-সহ বিভিন্ন জায়গায় এখনও জল জমে আছে। পাটুলির একাংশ, গড়িয়া, নিউ গড়িয়া, সন্তোষপুর এভিনিউ, পার্ক সার্কাসের একাংশ, তপসিয়ার ভিতরের গলিপথ, বোসপুকুর তালবাগান এলাকা, আমহার্স্ট স্ট্রিট, নাগেরবাজারের একাংশ, বউবাজার, মহাত্মা গান্ধী রোড, মেটিয়াবুরুজের একাংশ, বরিশার একাংশ, সরসুনা এবং জোকায় এখনও জল জমে আছে। এজেসি বোস রোড সংলগ্ন মিন্টো পার্ক, ক্যামাক স্ট্রিটেও জল সবটা নামেনি। গড়িয়াহাট রোড আইটিআইয়ের কাছে সকালেও জল জমে। সল্টলেক সেক্টর ফাইভে কলেজ মোড় এবং সংলগ্ন এলাকায় প্রায় হাঁটুসমান জল জমে গিয়েছিল। বুধবার সকালে কলেজ মোড় এবং সংলগ্ন এলাকায় জল প্রায় পুরোটাই নেমে গিয়েছে।
মঙ্গলবার লোকাল ট্রেন এবং মেট্রো পরিষেবা বুধবার সকাল থেকেই স্বাভাবিক। হাওড়া ও শিয়ালদা ডিভিশনে সকাল থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে চক্ররেলের কলকাতা স্টেশনে এখনও জল জমে রয়েছে।
এদিকে, ফের দুর্যোগের ভ্রকুটি। বৃহস্পতিবার থেকেই কলকাতা-সহ একাধিক জেলায় ফের বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের সতর্কতা দিল আলিপুর আবহাওয়া অফিস। শনিবার অর্থাৎ পঞ্চমির দিন বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে কলকাতায়। ২৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার চতুর্থীর দিনে নতুন করে উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি নিম্নচাপ তৈরি হবে। বুধবার অর্থাৎ ২৪ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে একাধিক জায়গায় ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিমি বেগে দমকা হাওয়া বইতে পারে এবং বজ্রপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে। বৃষ্টির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ৭০ থেকে ১১০ মিলিমিটার।
বৃহস্পতিবার ফের নিম্নচাপ আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার চতুর্থীর দিনে নতুন করে উত্তর-পশ্চিম এবং মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় একটি নিম্নচাপ তৈরি হবে। তা ক্রমশ পশ্চিম দিকে এগোবে। পশ্চিম-মধ্য ও উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে এই নিম্নচাপ গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে শুক্রবার অর্থাৎ পঞ্চমীর দিনে। এর প্রভাব থাকবে দক্ষিণ ওডিশা এবং উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে। ষষ্টীর দিনে তা ওডিশা এবং অন্ধ্র উপকূলের স্থলভাগে প্রবেশ করবে। চতুর্থীর নিম্নচাপের প্রভাবে বাংলার উপকূল সংলগ্ন জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে এবং ওডিশা সংলগ্ন জেলাগুলিতে রয়েছে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। আপাতত ৫ দিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।