'কলকাতা থেকে নিউটাউন নৌকা ক'টায় ছাড়বে?' 'সল্টলেক যাওয়ার জাহাজ কি ছেড়ে দিয়েছে?' ৬ ঘণ্টার প্রবল বৃষ্টিতে বানভাসি কলকাতা। জলে ভাসছে একাধিক এলাকা। কোথাও হাঁটু তো কোথাও আবার কোমরসমান জল। দুর্যোগের মাঝে নেটপাড়াতেও চলছে মিমের বন্যা। নেটিজেনদের মুখে এখন একটাই কথা, 'জীবদ্দশায় কখনও এমন বৃষ্টি দেখিনি।'
কেউ বলছেন, 'কিউমুলোনিম্বাস', কারও মতে এটাই 'মেঘ ভাঙা বৃষ্টি'। আবহাওয়া দফতরের কাছে কেন এই তুমুল বৃষ্টির কোনও সঠিক পূর্বাভাস ছিল না, তা নিয়েও কাটাছেঁড়ায় ব্যস্ত নেটিজেনরা। ১০ জন নাগরিকের প্রাণ হারানোর ঘটনা নিয়ে সরকারপন্থী আর বিরোধীপক্ষের নেটিজেনদের মধ্য তুমুল বাদানুবাদের মাঝেই জলমগ্ন কলকাতা কয়েকজনের কাছে হাসির কন্টেন্টও হয়ে দাঁড়ায়। কেউ পোস্ট করেছেন, '৩০০ মিলি মানে মাত্র ৫ পেগেই কলকাতা টলমল!' কেউ আবার মদের বোতল আর গ্লাস হাতে কোমরসমান জলেই আসর জমিয়ে ফেলেছেন। সেই ভিডিও রাতারাতি ভাইরাল হয়েছে।
প্রবল বর্ষণের জেরে কলকাতা কার্যত জলে ভাসছে। দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে এ হেন পরিস্থিতির জেরে প্রচুর ছোটবড় প্যান্ডেলের ক্ষতি হয়েছে। AI দিয়ে নেটিজেনরা তৈরি করে ফেলেছেন জলমগ্ন শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের চিত্র। জলে ভেসে ভেসেই আলো ঝলমলে শ্রীভূমির প্যান্ডেলে ভিড় জমিয়েছেন অসংখ্য মানুষ।
ব্লগারদের কাছেও কলকাতার এই পরিস্থিতি কন্টেন্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে। 'বিটকেল বাঙালি' পেজের ভিডিও দেখে হাসতে হাসতে পেটে খিল ধরছে। ব্লগারের প্রশ্ন, 'হ্যালো উবের, আপনাদের অপশনে নৌকা দেখাচ্ছে না কেন? কলকাতায় তো জল জমে গিয়েছে, নাম বদলে জলযাতা করে দিই? উল্টোডাঙায় তো আর ডাঙা নেই, উল্টোজল নাম দিই? পার্কস্ট্রিট জলের তলায়, তবে কি সেটাকে ওয়াটার পার্ক বলা যায়?'
এদিকে, রাজনৈতিক মিমও কম হয়নি নেটপাড়ায়। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জমা জল পরিদর্শনে নামতেই তাঁকে নিয়ে মিম তৈরি হয়েছে। আবার কারও কথায়, 'বাম আমলে কিন্তু পুজোর সময়ে বৃষ্টি হতো না।' জমে জলে সাইনবোর্ড উঁকি দিচ্ছে, 'আপনার পাড়া, আপনার জলাধার।' সে ছবিও পোস্ট করেছেন কেউ কেউ। সব মিলিয়ে কলকাতার এই বিপর্যয়ের মাঝেও নেটপাড়া মজে ছিল রসিকতায়। ৩৯ বছরের রেকর্ড ভাঙা বৃষ্টিই হয়ে উঠেছিল সোশ্যাল মিডিয়ার ট্রেন্ডিং কন্টেন্ট।