scorecardresearch
 

RG Kar Case: ধামাচাপা দিচ্ছে পুলিশ-কেন প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা? মিছিল থেকে প্রশ্ন নির্যাতিতার পরিবারের

বিক্ষোভকারীদের এক সমাবেশে নির্যাতিতা চিকিৎসকের কাকিমা বলেন, "পুলিশ ও প্রশাসন ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। কেন তারা সবসময় প্রমাণ চাপা দিতে চাইছে? তার বাবা-মা দেহ দেখার জন্য তিন থেকে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করেছিলেন। ওই কক্ষে (সেমিনার হলে) প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।" তাঁর আরও সংযোজন "শতাধিক মানুষ গিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু তাদের (বাবা-মা) ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। জঘন্য ঘটনার এক মাস হয়ে গেছে। কেন তাড়াহুড়ো করে সবকিছু করা হলো? পুলিশ ও প্রশাসন যদি এমন কাজ করে, তাহলে আমরা কার কাছে যাব?" প্রশ্ন নির্যাতিতার পরিবারের।

Advertisement
ধামাচাপা দিচ্ছে পুলিশ-কেন প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা? মিছিল থেকে প্রশ্ন নির্যাতিতার পরিবারের ধামাচাপা দিচ্ছে পুলিশ-কেন প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা? মিছিল থেকে প্রশ্ন নির্যাতিতার পরিবারের

আরজি কর হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় আজ সুপ্রিম কোর্টে শুনানি। তার আগে  ফের একজোট হয়ে পথে নামেন চিকিৎসকরা। জুনিয়র ডাক্তার থেকে শুরু করে শহরের বিভিন্ন নামী সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিথযশা চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, প্যারামেডিক্যাল স্টাফ, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টরা রবিবার বিকেলে পথে নামেন ন্যায় বিচার চেয়ে। রবিবারের  মিছিলে সামিল হয়েছিলেন নির্যাতিতার পরিবারও। আরজি করের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে যে প্রাথমিক তদন্ত হয়েছিল, তাতে অনেক গাফিলতি ছিল বলে মিছিল থেকে আবারও অভিযোগ তুললেন নির্যাতিতার বাবা-মা। 

বিক্ষোভকারীদের এক সমাবেশে নির্যাতিতা চিকিৎসকের কাকিমা  বলেন, "পুলিশ ও প্রশাসন ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। কেন তারা সবসময় প্রমাণ চাপা দিতে চাইছে? তার বাবা-মা দেহ দেখার জন্য তিন থেকে চার ঘণ্টা অপেক্ষা করেছিলেন। ওই কক্ষে (সেমিনার হলে) প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।" তাঁর আরও সংযোজন  "শতাধিক মানুষ গিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু তাদের (বাবা-মা) ভেতরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়নি। জঘন্য ঘটনার এক মাস হয়ে গেছে। কেন তাড়াহুড়ো করে সবকিছু করা হলো? পুলিশ ও প্রশাসন যদি এমন কাজ করে, তাহলে আমরা কার কাছে যাব?" প্রশ্ন নির্যাতিতার পরিবারের।

কাকিমা আরও বলেন  যে তিনি সর্বদা প্রতিবাদকারী জুনিয়র ডাক্তারদের সমর্থন করবেন এবং  ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জুনিয়র ডাক্তার এবং অন্যদের প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। অন্যদিকে নিহত চিকিৎসকের বাবা জানান, তার মেয়ের মৃত্যু পরিবারকে ভেঙে দিয়েছে। তিনি বলেন, "এই ঘটনাটি সবকিছু শেষ করে দিয়েছে। একদিনের মধ্যেই, আমাদের জীবন এবং স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। " চোখে জল নিয়েই নিহত চিকিৎসকের বাবা আশা প্রকাশ করেন যে তিনি জুনিয়র ডাক্তারদের কাছ থেকে সমর্থন পাবেন যারা তার মেয়ের বিচার দাবি করছেন। তাঁর আর্তি, "একটি সমাধান না হওয়া পর্যন্ত দয়া করে আমার সঙ্গে  থাকুন। আমরা  আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ডাক্তারদের সঙ্গে আছি। আপনাদের কণ্ঠ আমাকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করেছে। এই ঘটনার পর আমি  পড়েছিলাম।" 

আরও পড়ুন

Advertisement

ধর্মতলায় ডাক্তারদের মিছিলে ও রাসবিহারীতে বিভিন্ন স্কুল কলেজের প্রাক্তনীদের মিছিলে হাজির হয়ে নির্যাতিতার বাবা-মা বলেন আর কোনও বাবা-মাকে যেন এভাবে সন্তানহারা না হতে হয়। আজতক বাংলার কাছে  নির্যাতিতা ডাক্তারের বাবা-মা প্রশ্ন তোলেন  কেন তাদের হাসপাতালে মেয়ের দেহ  দেখতে দেওয়া হয়নি। নির্যাতিতার মা বলেন, "তারা কিছু লুকিয়ে রেখেছিল এবং আমাদের সন্তানের দেহ  দেখায়নি। কেন আমাদের মেয়ের মুখ দেখাতে চার ঘণ্টা সময় লাগলো? তারা কী লুকিয়েছিল? তারা তাড়াহুড়ো করছিল।" তিনি অভিযোগ করেছেন যে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে, তার মেয়েকে হত্যা করার জন্য কেউ মোতায়েন করেছিল কারণ সে আরজি কর হাসপাতালে যেত ও  কিছু অন্ধকার রহস্য জানত।

রাসবিহারীতে  নির্যাতিতার বাবা বলেন, গত ৮ অগাস্ট রাতে ওর সঙ্গে আমাদের কথা হয়। বলে বাইরে থেকে খাবার আনা হয়েছে। টানা ডিউটি করতে হচ্ছিল ওকে। পরদিন সকাল ১১টায় জানতে পারি আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। যেখানে ও মানুষকে বাঁচাতে গিয়েছিল সেখানেই তার জীবন চলে যায়। পরে আমরা জানতে পারি বিষয়টি তা নয়। ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটে আরজি কর হাসপাতালে। যে ১৫-২০ মিনিট বিশ্রাম পায় না তাকে ৭-৮ ঘণ্টা কোনও জুনিয়র, হাসপাতালের কোনও স্টাফ বা গ্রুপ ডি কর্মচারী কারও প্রয়োজন হল না? এই প্রশ্নের উত্তর চেয়ে গত ১ মাস ধরে ঘুরছি। কেউ আমাকে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছে না। আজ এত লোকের জমায়েত দেখে বুঝতে পারছি বিচার আমরা পাবই। এত লোকের চাওয়া কখনও মিথ্যে হবে না। যারা এই বিচারের জন্য রাস্তায় নেমেছেন তাদের আমি আমার পরিবারের সদস্য হিসবে মনে করছি। আশা করছি যতদিন আমার মেয়ে বিচার না পাবে ততদিন তারা তাদের এই উদ্যোগ চালিয়ে যাবেন। আমি আমার মেয়ের বিচার পাব। অন্যদিকে, নির্যাতিতার মা বলেন, আমি এক সন্তানহারা মা। একমাস হল আমার সন্তাকে হারিয়ে ফেলেছি। তার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। আর সেই স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়েই চরম লাঞ্চনার শিকার হয়ে তার মৃত্যু হল। আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আপনাদের আমি আত্মীয় বলে মনে করি। আমার অনুরোধ যতদিন না আমার মেয়ে বিচার পায় ততদিন আপনারা আমাদের পাশে দাঁড়িয়ে যান। আপনারা প্রতিবাদটা চালিয়ে যান। প্রশাসন আমার সঙ্গে কোনও রকম সাহায্য করেনি। এমন একটা ক্রাইম হয়েছে যা ঢাকা দেওয়ার জন্য ও তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য সব চেষ্টা হয়েছে। আমি চাই স্বাস্থ্য় দফতরে যে ঘুঘুর বাসা তৈরি হয়েছে তা ভাঙা হোক। যারা প্রমাণ লোপাটের সঙ্গে জড়িত তারা যেন সাজা পায়। আর যেন কোনও মাকে সন্তানহারা না হতে হয়।

Advertisement